নলছিটিতে যুবলীগ নেতা দ্বারা যুবদল নেতা হয়রানির স্বীকার


ঝালকাঠির নলছিটিতে যুবদল নেতা সজিব ফকিরকে দীর্ঘদিন ধরে জোরপূর্বক জমি দখল, চাঁদাবাজি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান যুগ্ম আহ্বায়ক খান মনিরুজ্জামান বিপ্লবের বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার কুলকাঠি ইউনিয়নের কাপড়কাঠি গ্রামে বিপ্লব খান ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয়দের শত একর জমি দখল করে মাছের ঘের তৈরি করেন। এর মধ্যে যুবদল নেতা সজিব ফকির ও তার পরিবারের প্রায় ৫ একর জমি দখল করে ঘের সম্প্রসারণ করেন তিনি।
জমি ফেরত চেয়ে ৪ অক্টোবর শনিবার নলছিটি থানায় ভুক্তভোগী মোঃ চান মল্লিক বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। এরপর ৫ অক্টোবর ভুক্তভোগী জমিদাতাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন যুবলীগ নেতা বিপ্লব খানের ভাই কাওছার খান।
যুবদল নেতা সজিব ফকির বলেন, আমি ২০১৪ সালে জমি দখলের প্রতিবাদ করায় আমাকে হয়রানির উদ্দেশ্য তখন মিথ্যা মামলা দেয়, যার ফলে আমাকে এলাকা ছেড়ে ঢাকায় গিয়ে ব্যবসা শুরু করতে হয়। পরে বিপ্লব খান আমার কাছে ৮ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করলে আমি তিন লাখ ৮০ হাজার টাকা দেই, তবে বাকি ২০ হাজার টাকা না দেওয়ার কারনে আমার মোটরসাইকেল নিয়ে যায় বিপ্লব বাহিনী তখন তাদের ভয়ে মুখ খুলতে পারিনি। ২০২৪ সালে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আমার জমি ও মোটরসাইকেল ফেরত চাইলে বিপ্লব ও তার সহযোগীরা আমাকে আটক করে মারধরের চেষ্টা করে। পরবর্তীতে বিএনপি নেতারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আমাকে উদ্ধার করেন।
এরপর থানায় অভিযোগ, মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেও আইনী সূরাহা না আমি আমি শঙ্কায় দিন পার করছি। নতুন করে আমার ও আমার পরিবারের ৪ জনের বিরুদ্ধে একটি বানোয়াট তথ্য দিয়ে হয়রানির উদ্দেশ্যে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেছেন যাহা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। স্বৈরাচার আওয়ামী নেতারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও বিপ্লব খান ও তার বাহিনী এখনো বীরদর্পে চালাচ্ছেন তাদের রাজত্ব।
এছাড়াও এলাকাসূত্রে জানাযায় বিপ্লব খান রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বনবিভাগের মূল্যবান গাছ কেটে কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন বলেও জানা গেছে।
যুবলীগ নেতা বিপ্লবের ছোটভাই কাওছার খান ৬অক্টোবর নতুন করে নলছিটি থানায় সজিব ফকিরসহ চারজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেছেন। অভিযোগ রয়েছে এই কাওছার খান বেনামী একটি ঔষধ কোম্পানির রিপ্রেজেনটেটিভ এর চাকরি করতেন। বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে তার ভাইয়ের প্রভাব খাটিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকের ডাক্তারদের দিয়ে তার কোম্পানির ঔষধ লেখাতে বাধ্য করতেন।
ভুক্তভোগী স্থানীয়দের দাবী আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা আমির হোসেন আমুর ঘনিষ্ঠ থাকায় বিপ্লব খান একসময় এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে বিপুল সম্পদের মালিক বনে যান। সরকারের পতনের পর তার বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উঠছে, তবু এখনো প্রভাব খাটিয়ে ভুক্তভোগীদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে যুবলীগ নেতার ছোটভাই বদরুজ্জামান কাওসার বলেন,আমরা যাদের কাছ থেকে জমি লিজ নিয়েছি তাদের কাছে টাকা দিয়ে দিছি। আমাদের জানা নেই সেখানে তাদের জমি আছে কিনা।
তবে এসব বিষয়ে জানতে যুবলীগ নেতা মনিরুজ্জামান বিপ্লব খান জানান, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। ৫ আগস্টের পরে সজিব ফকির আমার থেকে ৪ লাখ টাকা নিয়েছে আমাকে প্রাননাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন আমি বহু আগে যুবলীগ করেছি আমি অসুস্থ আমি এখন কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত নই।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ