বাংলাদেশ-তুরস্ক পররাষ্ট্র পর্যায়ের চতুর্থ পলিটিক্যাল কনসালটেশন সম্পন্ন


বাংলাদেশ ও তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ের চতুর্থ পলিটিক্যাল কনসালটেশন মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম ও তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ. বেরিস একিনজি নেতৃত্বে নিজ নিজ প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করে।
উষ্ণ, সৌহার্দ্যপূর্ণ ও গঠনমূলক পরিবেশে বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটে। উভয়পক্ষই শান্তি, স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।
বৈঠকে তুরস্ক বাংলাদেশের গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রশাসন প্রসারে নেওয়া সংস্কারমূলক উদ্যোগের প্রশংসা করেছে এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গঠনে সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
উভয়পক্ষ ব্যবসা-বাণিজ্যে বৈচিত্র্য আনা, যোগাযোগ ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং যৌথ উদ্যোগ প্রসারের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তুরস্কের আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা, সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষেপ, শক্তি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে সহযোগিতা প্রসারিত করার বিষয়ে মতবিনিময় হয়েছে।
মানুষে-মানুষে যোগাযোগ বৃদ্ধি, গবেষণা ও উদ্ভাবন, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, যুব ও ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের ক্ষেত্রেও সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে বাংলাদেশ তুরস্কের স্বাস্থ্য সহায়তার জন্য প্রশংসা করেছে, বিশেষ করে জুলাই বিপ্লবের সময় আহতদের চিকিৎসা এবং কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তুরস্কের ফিল্ড হাসপাতাল পরিচালনার জন্য। এছাড়া রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় তুরস্কের রাজনৈতিক ও মানবিক সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে।
দুই দেশ মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের প্রয়োজনীয়তা এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ও জেরুজালেমকে পূর্ব ১৯৬৭ সালের সীমার মধ্যে রাজধানী করার প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে। এছাড়া গাজা উপত্যকায় নারী ও শিশুসহ অসামরিক নাগরিকদের উপর চলমান সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও মানবিক প্রবেশাধিকারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে।
বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও সমঝোতাপত্রের স্থিতি পর্যালোচনা করা হয় এবং দ্রুত চূড়ান্ত করার বিষয়ে সহমত পোষণ করা হয়েছে। আগামী বৈঠক আঙ্কারায় অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিনিধিরা নিশ্চিত করেছেন, চতুর্থ কনসালটেশনের ফলাফল বাংলাদেশ-তুরস্ক অংশীদারত্বকে আরও দৃঢ় করবে।
ভিওডি বাংলা/জা