মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাকে আজও জেরা করবেন


জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ তৃতীয় দিনের মতো জেরা করা হবে মামলার মূল তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরকে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন এই জেরা করছেন।
বুধবার (৮ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এই জেরা অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো জেরা করে তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যকে চ্যালেঞ্জ করেন ডিফেন্স আইনজীবী আমির হোসেন। তিনি আন্দোলনকারীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলি চালানোকে ‘বাধ্যতামূলক’ দাবি করে তদন্ত কর্মকর্তার যুক্তি খণ্ডন করেন। দিনভর জেরা চললেও শেষ না হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল আজ পর্যন্ত তা মুলতবি রাখে।
প্রসিকিউশনের পক্ষে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, আবদুস সাত্তার পালোয়ান, তারেক আবদুল্লাহ, মামুনুর রশীদসহ অন্যান্য সদস্য।
৬ অক্টোবর এই জেরা শুরু হয়। এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেন তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীর। তিনি রাষ্ট্রপক্ষের ৫৪তম ও সর্বশেষ সাক্ষী। তার জবানবন্দিতে ৪১টি জেলার ৪৩৮টি স্থানে হত্যাকাণ্ড এবং ৫০টিরও বেশি জেলায় মারণাস্ত্র ব্যবহারের তথ্য উঠে আসে।
২৯ সেপ্টেম্বর তিনি যমুনা টেলিভিশনের একটি প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শন করেন। এ ছাড়া ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনাও দেন। তার জবানবন্দি বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত হয় এবং বিবিসি, আল-জাজিরা ও আমার দেশ-এর প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়।
২৮ সেপ্টেম্বর তদন্ত কর্মকর্তার জবানবন্দি শুরু হয়। ওই দিন ১৭টি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়, যাতে জুলাই-আগস্টের ঘটনাবলির নৃশংস চিত্র ফুটে ওঠে।
এ মামলায় ২৫ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। শেষ সাক্ষীর জেরা শেষ হলেই যুক্তিতর্ক ও রায় ঘোষণার দিকে অগ্রসর হবে বিচার প্রক্রিয়া।
মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দায় স্বীকার করে ৩৬ নম্বর সাক্ষী হিসেবে রাজসাক্ষী হন। অন্য সাক্ষীদের জবানবন্দিতে গত বছরের জুলাই-আগস্টে দেশজুড়ে হত্যাযজ্ঞের ভয়াবহ বর্ণনা উঠে এসেছে। এসব ঘটনার জন্য শেখ হাসিনা, কামালসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন শহীদ পরিবারের সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।
গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে তথ্যসূত্র, জব্দ তালিকা ও প্রমাণাদি সংযুক্ত রয়েছে। সাক্ষী তালিকায় আছেন ৮১ জন।
গত ১২ মে তদন্ত সংস্থা মামলার প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউটরের কাছে জমা দেয়।
ভিওডি বাংলা/জা