মধ্যপ্রাচ্য:
আটকের পর শহিদুল আলম এখন ইসরায়েলে


বাংলাদেশি আলোকচিত্রী ও দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলমসহ আন্তর্জাতিক নৌবহর ফ্রিডম ফ্লোটিলার সদস্যদের ইসরায়েলি নৌবাহিনী আটক করেছে।
‘থাউজ্যান্ড ম্যাডলিনস’ অভিযানে অংশ নেওয়া এই নৌবহর গাজার উপকূলে পৌঁছানোর আগেই আন্তর্জাতিক জলসীমায় আটক করা হয়। আটটি জাহাজ এবং সেগুলোতে থাকা প্রায় ১৫০ স্বেচ্ছাসেবীকে ইসরায়েলের আশদোদ বন্দরে রাখা হয়েছে। আটকরা সবাই সুস্থ আছে এবং দ্রুত নিজ দেশে ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। খবর দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের।
বিবৃতিতে বলা হয়, বুধবার গাজা উপকূলে পৌঁছানোর আগেই আন্তর্জাতিক জলসীমাতে আটকে দেওয়া হয় ফ্লোটিলার ৮টি জাহাজ। সেইসঙ্গে দেড়শো স্বেচ্ছাসেবীকে আটক করে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। বর্তমানে তারা সবাই সুস্থ আছেন। দ্রুত তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
এই নৌবহরের ‘কনশানস’ নামের একটি জাহাজে ছিলেন বাংলাদেশি আলোকচিত্রি ও মানবাধিকার কর্মী শহিদুল আলম। বর্তমানে আটক অবস্থায় অন্যান্য অধিকারকর্মীদের সঙ্গে ইসরায়েলে আছেন তিনি।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) আয়োজিত ৯ জাহাজের বহরটি দুই সপ্তাহ আগে ইতালি থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। একটি বড় জাহাজে প্রায় ১০০ জন এবং বাকি আটটি ছোট নৌযানে আরও ৫০ জন কর্মী ছিলেন। আয়োজকদের দাবি, অন্তত দুইজন ইসরায়েলি নাগরিকও ছিলেন এই নৌবহরে।
বুধবার ভোরে গাজা উপকূল থেকে প্রায় ১৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভূমধ্যসাগরে ইসরায়েলি নৌবাহিনীর বিশেষ ইউনিট শায়েতেত ১৩ এবং অন্যান্য বাহিনী দ্রুত অভিযান চালিয়ে নয়টি জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ‘কনশানস’ নামের ৬৮ মিটার দীর্ঘ যাত্রীবাহী জাহাজে নামার জন্য কমান্ডোরা হেলিকপ্টার থেকে রশি বেয়ে নামেন।
ফ্লোটিলা সংগঠকরা এক বিবৃতিতে অভিযোগ করেছেন, আমাদের জাহাজে ইসরায়েলি সামরিক হেলিকপ্টার থেকে হামলা চালানো হয়েছে এবং আমাদের অন্য আটটি নৌযানও অবৈধভাবে আটক ও ছিনতাই করা হয়েছে।
এফএফসি তখন জানায়, তাদের অভিযানে অংশ নেওয়া মানবাধিকারকর্মী, চিকিৎসক ও সাংবাদিকদের আটক করে অজানা স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তাদের দাবি, নৌবহরটি ১ লাখ ১০ হাজার ডলারের বেশি মূল্যের ওষুধ, রেসপিরেটরি সরঞ্জাম ও পুষ্টি সহায়তা বহন করছিল, যা গাজার হাসপাতালগুলোর জন্য পাঠানো হচ্ছিল।
এদিকে ঘটনাটির তীব্র নিন্দা জানিয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরায়েলের এই হামলা ও ছিনতাইকে ‘সমুদ্র ডাকাতির শামিল এবং আন্তর্জাতিক আইনের মারাত্মক লঙ্ঘন’ বলে আখ্যা দেয়।
তুরস্ক জানায়, নৌবহরে তুর্কি নাগরিক ও সংসদ সদস্যরাও ছিলেন। দেশটি বলেছে, গণহত্যাকারী ইসরায়েলি সরকার শান্তিপূর্ণ উদ্যোগগুলোকেও আক্রমণ করছে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে।
এর আগে ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ অভিযানেও ইসরায়েল ৪০টিরও বেশি নৌকা আটক করেছিল, যেখানে ৪৫০ জনের বেশি অধিকারকর্মী ছিলেন।
ভিওডি বাংলা/জা