• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শিবচরে অবাধে ইলিশ শিকার

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি    ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১০ পি.এম.
ছবি: ভিওডি বাংলা

মাদারীপুরের শিবচরে ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ সময় চলাকালীন অবাধে চলছে ইলিশ শিকার এবং নদীর পাড়েই ইলিশের জমজমাট অস্থায়ী হাট বসেছে।

বৃহস্প‌তিবার (৯ অক্টোবর) সকাল থে‌কে রাত পর্যন্ত উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের কাজীরসূরা, চরজানাজাতের হীরা খার বাজার, সামাদ খার চর, বেপারীর হাট, বাগড়ার চর, কাঁঠালবাড়ীর করলী  নদীর পাড় এবং চরজানাজাতের শেষ সীমানার চৌদ্দ নং চরসহ বেশ কয়েকটি স্থানে ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে পুরোদমে। 

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন ইলিশ মাছ শিকার, আহরণ, মজুদ, পরিবহন ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করছে মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় । কিন্তু কিছু অসাধু ও মৌসুমি জেলে এই সরকারি নির্দেশ অমান্য করে দেদারসে মা ইলিশ শিকার করছে এবং নদীর পাড়ে বসা অস্থায়ী হাটে সেগুলো বিক্রি করছে। সেখানে লাখ লাখ টাকার ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে নদীর পাড়সহ বিভিন্ন স্থানে। লক্ষ্য করা গেছে, প্রকৃত জেলেদের চেয়ে মৌসুমি জেলের সংখ্যা বহুগুণ বেশি।

সরজমিনে বন্দরখোলা ইউনিয়নের কাজীরসূরা এলাকার নদীর পাড় ঘুরে দেখা যায়, ‘এ যেন এক রাত্রিকালীন মাছের বাজার।’ হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়েছে এই নদীর পাড়ে। পদ্মা নদী থেকে একের পর এক ট্রলার আসছে, আর ক্রেতারা দরদাম করে মাছ কিনে নিচ্ছেন। মাছ বিক্রি করেই ট্রলারগুলো আবার জাল ফেলার জন্য নদীতে ফিরে যাচ্ছে। প্রতিটি ইলিশই ডিমে ভর্তি, যা ডিম ছাড়ার আগেই জেলেদের জালে ধরা পড়ছে।

ইলিশ মাছ কিনতে আসা আব্দুল আলী নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘আমি সাধারণ একটা চাকরি করি। বাজারে ইলিশ মাছের যে দাম, তাতে কিনে খেতে পারি না। আমার ছোট্ট একটা ছেলে আছে, সে ইলিশ মাছ খুব পছন্দ করে। তাই খবর পেলাম এখানে কম দামে ইলিশ মাছ পাওয়া যায়, তাই কিছু মাছ কিনতে এসেছি।’ এই নদীর পাড়ে দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন ইলিশ মাছ কিনতে আসেন। শিবচর উপজেলার পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর,রাজবাড়ী,গোপালগঞ্জ, মাগুরা, নড়াইল জেলাসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ এখানে মাছ কিনতে আসেন। পুরুষ ক্রেতাদের পাশাপাশি নারী ক্রেতাদের উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো। ইলিশ মাছ কেনার পর বহন করার জন্য অনেকেই স্যুটকেস, লাগেজ, কাপড়ের ট্রলি বা বড় চামড়ার ব্যাগ সঙ্গে নিয়ে এসেছেন।

শিবচর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সত্যজিৎ মজুমদার বলেন, ‘আমি এখানে নতুন এসেছি। তারপরও নিষিদ্ধের মধ্যে মা ইলিশ শিকার না করার জন্য জেলেদের সচেতন করছি। দিনরাত মৎস্য অফিস, নৌ পুলিশ, থানা পুলিশ নিয়ে নদীতেই আছি, যেন কোনো জেলে জাল ও ট্রলার নিয়ে নদীতে না নামে।

চরজানাজাত নৌ ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম খান বলেন, ‘নিষিদ্ধের শুরু থেকে নদীতে আমাদের প্রতি মুহূর্তে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে টহল চলছে। নিষিদ্ধ অমান্য করে যারা ইলিশ মাছ শিকার করে, তাদের আটক করে নিয়মিত মামলায় শিবচর থানার মাধ্যমে আদালতে প্রেরণ করা হয়।’

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এইচ.এম.ইবনে মিজান বলেন, ‘এ পর্যন্ত ৩১ জনকে আটক, প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, প্রায় ২ লক্ষ ৪০ হাজার মিটার জাল পুড়িয়ে ফেলা এবং ১২টি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার জব্দ করে চরজানাজাত নৌ পুলিশ ফাঁড়ির হেফাজতে রাখা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার মধ্যে এই অভিযান দিনরাত চলমান থাকবে।’

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ধানের পোকা দমনে পার্চিং পদ্ধতির সুফল পাচ্ছে কৃষক
ধানের পোকা দমনে পার্চিং পদ্ধতির সুফল পাচ্ছে কৃষক
টাঙ্গাইলে বিশ্ব ডিম দিবস উদযাপিত
টাঙ্গাইলে বিশ্ব ডিম দিবস উদযাপিত
টাইফয়েডের টিকা সম্পূর্ণ নিরাপদ ও জীবনরক্ষাকারী
টাইফয়েডের টিকা সম্পূর্ণ নিরাপদ ও জীবনরক্ষাকারী