• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

২৮ জনের বিরুদ্ধে গুমের মামলা: এইচআরডব্লিউ সন্তোষ প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক    ১০ অক্টোবর ২০২৫, ০১:১৪ পি.এম.
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-ছবি সংগৃহীত

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ২৮ জনের বিরুদ্ধে গুমের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলকে সন্তোষ প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটি বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শীর্ষ পর্যায়ের কিছু সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তাসহ শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার পর তারা এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে।

এইচআরডব্লিউ অবশ্য এও বলেছে, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা এখনও ঘটছে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত ও মৃত্যুদণ্ড প্রয়োগ নিয়ে উদ্বেগের বিষয়গুলো রয়েই গেছে।
 
এইচআরডব্লিউর এশিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলির লেখা প্রতিবেদনটির শিরোনাম দেওয়া হয়েছে-ন্যায়বিচারের পথে এক ধাপ এগোল বাংলাদেশ’। প্রতিবেদনের শুরুতে ২০১৭ সালে এইচআরডব্লিউ প্রকাশিত অন্য একটি প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ টেনে আনা হয়। 

বাংলাদেশে গোপনে আটক রাখা ও গুম করা নিয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছিল উল্লেখ করে এইচআরডব্লিউ বলেছে, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সেই প্রতিবেদনকে ‘অপপ্রচার’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। বেশির ভাগ ‘নিখোঁজ’ ব্যক্তি সম্পর্কে তিনি বলেছিলেন, তারা গ্রেপ্তারের হাত থেকে পালিয়ে বেড়ানো অপরাধী, ঋণখেলাপি কিংবা প্রতারক।
 
মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, ওই সময় তার জোর দাবির কারণে আসাদুজ্জামান তদন্তের আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত কোনো তদন্ত হয়নি।

এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা সরকার ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালে বাংলাদেশে কর্তৃত্ববাদী প্রবণতা আরও শক্তিশালী হয়। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন আসাদুজ্জামান খান। বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন ও বাক্‌স্বাধীনতার হস্তক্ষেপ সম্পর্কে এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় সরকার সাধারণত সেগুলো অস্বীকার করত বা মিথ্যা আশ্বাস দিত।

প্রতিবেদনটি জানায়, ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত দমন-পীড়ন অব্যাহত থাকলেও টানা তিন সপ্তাহের তীব্র বিক্ষোভের পর সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। আন্দোলনে প্রায় ১,৪০০ জন প্রাণ হারান। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর গুম বিষয়ক তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়, যেখানে অন্তত ১,৮৫০টি অভিযোগ জমা পড়ে। তদন্তে দেখা গেছে, ৩০০ জনের বেশি ব্যক্তি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নিহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে মীনাক্ষী জানান, ২০১৬ সালে নিখোঁজ হওয়ার কিছুদিন আগে মীর আহমেদ বিন কাসেম তাকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি নিজের নিরাপত্তা নিয়ে ‘শঙ্কিত’ থাকার কথা জানিয়েছিলেন। তাকে একটি গোপন সামরিক গোয়েন্দা আটক কেন্দ্রে আট বছর ধরে আটক রাখা হয়েছিল এবং হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তিনি মুক্তি পান।

প্রতিবেদনের একেবারে শেষে এসে মীনাক্ষী লিখেছেন, মানবাধিকারকর্মী হিসেবে আমরাও এমন অলৌকিক মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করি। তবুও প্রায়ই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচার করা হবে। তবে, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং মৃত্যুদণ্ড প্রয়োগ নিয়ে উদ্বেগের বিষয়গুলো এখনো থেকে গেছে।

ভিওডি বাংলা/জা

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
আজ বিশ্ব ডিম দিবস
আজ বিশ্ব ডিম দিবস
লিবিয়া থেকে দেশে ফিরছেন ৩০৯ বাংলাদেশি
লিবিয়া থেকে দেশে ফিরছেন ৩০৯ বাংলাদেশি
শহিদুল আলমকে তুরস্কের সহায়তায় মুক্তির চেষ্টা চলছে
শহিদুল আলমকে তুরস্কের সহায়তায় মুক্তির চেষ্টা চলছে