• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

ভালো ড্রেস না থাকায় দাওয়াত পেতাম না: মারুফা আক্তার

স্পোর্টস ডেস্ক    ১১ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৪৩ পি.এম.
বাংলাদেশের পেসার মারুফা আক্তার-ছবি সংগৃহীত

চলমান নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে আলাদা ছাপ ফেলেছেন বাংলাদেশের পেসার মারুফা আক্তার। তার পেস-সুইংয়ে বিশ্বের বড় বড় ব্যাটাররা ধোঁকা খাচ্ছেন। লাসিথ মালিঙ্গা থেকে নাসের হোসেন-সবাইই তার প্রশংসা করছেন। জাহানারা আলমের পরবর্তী বাংলাদেশের পেস বোলিংয়ের কাণ্ডারি হিসেবে তাকে ভাবা হচ্ছে।

যদিও মারুফার উঠে আসার পথ এতটা মসৃণ ছিল না। বাবার সঙ্গে কৃষিকাজে সাহায্য করছেন মারুফা সেই ছবিটি অনেকেরই মনে থাকার কথা। কর্দমাক্ত জমিতে শক্ত হাতে লাঙলের হাল ধরে জমি চাষ করেছিলেন মারুফা। সেই অদম্য ছবিটি আজও অনেক উঠতি ক্রিকেটারের প্রেরণা হয়ে আছে। চরম দারিদ্র্যতা ও সমাজের কটুকথা, অবজ্ঞা পেছনে ফেলে আজ বিশ্ব মঞ্চে লা-সবুজের প্রতিনিধিত্ব করছেন মারুফা।

সম্প্রতি আইসিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের সংগ্রামের গল্প বলতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন এই পেসার। এসময় চোখের পানি আটকাতে পারেননি তিনি। 

নীলফামারীর সৈয়দপুরের হতদরিদ্র এক পরিবারে জন্ম মারুফার। ৬ সদস্যের পরিবারে অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী। নিজেদের জমি না থাকায় অন্যের জমিতে বর্গা চাষ করতেন মারুফার বাবা। বাবার কাজে সাহায্য করতেন মারুফারাও। আর্থিক দুর্দশার কারণে ভালো জামাকাপড় গায়ে জড়াতে পারতেন না। যে কারণে সামাজিক কোনো অনুষ্ঠানে আত্মীয়রাও তেমন ডাকতেন না।

সে কষ্টের কথা বলতে গিয়ে মারুফা বলেন, ‘কোথাও যদি বিয়ে বা কোনোকিছু (অনুষ্ঠান) হয়, দাওয়াত দেয় না? আমাদেরকে সেটাও দিতো না। বলতো ওদের ড্রেস নাই, ওইখানে গেলে আমাদের মান সম্মান থাকবে না। এরকম বলতো অনেকে। একটা সময় ছিল যখন আমরা ঈদেও নতুন জামা কিনতে পারিনি।’

কোথাও যদি বিয়ে বা কোনোকিছু (অনুষ্ঠান) হয়, দাওয়াত দেয় না? আমাদেরকে সেটাও দিতো না। বলতো ওদের ড্রেস নাই, ওইখানে গেলে আমাদের মান সম্মান থাকবে না। এরকম বলতো অনেকে। একটা সময় ছিল যখন আমরা ঈদেও নতুন জামা কিনতে পারিনি।

মারুফা বলেন, ‘আমার বাবা একজন কৃষক। আমাদের ওইরকম পয়সাকড়ি ছিল না। আব্বা যখন বাসায় ছিল না, বাজারে যেত তখন মাকে এসে অনেকে অনেক কথা বলতো। অনেক খারাপ খারাপ কথা বলে যেগুলা নেওয়ার মতো না। আমার মা রুমে গিয়ে কান্না করতো। আমি আবার গিয়ে এক কোণায় কান্না করতাম যে আমার জন্য এতকিছু হচ্ছে।’

সমাজের কটু কথা তাকে থামাতে পারেনি। দৃঢ় মনোবল ও প্রবল ইচ্ছাশক্তির কারণে আজ তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। টাইগ্রেস পেসার বলেন, “আমি ভাবতাম একদিন ভালো কিছু করে দেখাব। এখন আমরা যে অবস্থায় পৌঁছেছি, অন্যরা সেই জায়গায় নেই। আমি পরিবারের সাপোর্ট দিচ্ছি, এটি অন্যরকম এক শান্তি দেয়। ছোটবেলায় ভেবেছিলাম মানুষ কখন আমাদের দেখবে, এখন যখন টিভিতে নিজেকে দেখি, লজ্জা লাগে (হাসি)।”

ভিওডি বাংলা/জা

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সাকিব বিশ্বে একজন, মনে করেন তানজিম
সাকিব বিশ্বে একজন, মনে করেন তানজিম
সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে সন্ধ্যায় মাঠে নামছে বাংলাদেশ
সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে সন্ধ্যায় মাঠে নামছে বাংলাদেশ
বিশ্বকাপে ডাক পেলেন ঢাবি ছাত্রদল নেতা
বিশ্বকাপে ডাক পেলেন ঢাবি ছাত্রদল নেতা