বাঁশখালীতে কবর থেকে লাশ উত্তোলনের নির্দেশ আদালতের


চট্টগ্রামের বাঁশখালী পুর্ব কোকদন্ডীর মৃত ব্যবসায়ী নুর আহমদ প্রকাশ দৌলত খান (৫৮) এর লাশ উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। নিহতের মেয়ের দায়ের করা হত্যা মামলার প্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল হামিদ।
পরিবার সুত্রে জানা গেছে, নিহত নুর আহমদ গুনাগরি রামদাশমুনশী বাজারের একজন ব্যবসায়ী। তিনি গত ৫ অক্টোবর রাতে দোকানে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যান বলে সবাই ধারণা করেন।
স্বাভাবিকভাবে দাফনকাজ সম্পন্ন হলেও শরীরে কিছু আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায় এবং মৃত্যুর পর দোকানের কর্মচারী মোহাম্মদ মন্নান (৩০) মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে আত্মগোপনে চলে যায়। এরপর এই মৃত্যুকে ঘিরে সবার মধ্যে রহস্যের সৃষ্টি হয়।
পরে এই ব্যাপারে গত বুধবার (০৮ অক্টোবর) নিহতের মেয়ে মর্জিনা আক্তার বাদী হয়ে কর্মচারী মান্নানকে প্রধান আসামি করে বাঁশখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশী মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)কে মামলা রেকর্ড, লাশ উত্তোলন, সুরত হাল তৈরি, ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, দুই মাস পূর্বে সাতকানিয়ার ছদাহা আফজল নগরের আবদুল নবীর ছেলে মোঃ মন্নান (৩০) দোকান কর্মচারী হিসেবে যোগ দেন। এই দোকানে মাইক, সাউন্ড সিস্টেম, লাইটিং, ভাড়ার ব্যবসা ছিল। দোকান মালিক নুর আহমদ ও কর্মচারী মোহাম্মদ মন্নান দোকান ঘরে রাত যাপন করতেন। বিয়ের অনুষ্ঠান, দুর্গা পূজার সময় ব্যাবসায়ীর অর্জিত ১২ লাখ টাকা ও ১ ভরি স্বর্ণ দোকানে ট্রাঙ্কে রক্ষিত ছিল। এই টাকার লোভে ঘটনা ঘটেছে। গত ৫ অক্টোবর রাতের ২টা হতে ৫টার মধ্যে যে কোন এক সময় আমার পিতাকে দোকানের কর্মচারী মোহাম্মদ মন্নানসহ আরো ৩/৪ মিলে হত্যা করে লাশ রেখে পালিয়ে যায়।
এই বিষয়ে আব্দুল মান্নানের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায় এবং ঘটনার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।
মামলার বাদী মর্জিনা আক্তার বলেন, আমরা ধারণা করেছিলাম হঠাৎ করে রাতে অসুস্থ হয়ে পড়ে মৃত্যু হয়েছে। তবে বাবার গোসলের পূর্বে গলার নিচে দাগ দেখি তাতে আমার সন্দেহ হয়। মৃত শরীরে গলার নিচে দাগ ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। এইভাবে মনে দুশ্চিন্তা ছিল। এজন্য বাধ্য হয়ে মামলার চিন্তা করি। এখন মনে হচ্ছে পিতার মৃত্যু পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। দোকান কর্মচারী পালানোর পর অনেকে খুন করা হয়েছে বলে জানান। বেশ কিছু তথ্যসহ ভিডিও সংগ্রহ করেছি।
বাদীর আইনজীবী মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, মামলার আসামি দোকান কর্মচারী মোঃ মন্নান পলাতক রয়েছে এতেই সন্দেহ, দোকানের হিসাবের টাকা নেই। সব কিছু আদালতকে অবহিত করা হয়েছে। আদালত ওসিকে মামলা রেকর্ড, লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন। মামলাটি পরিদর্শক তপন কুমার বাগচীকে তদন্ত করার দায়িত্ব দিয়েছেন। কয়েক দিনের মধ্যেই আশা করছি লাশ উত্তোলনের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু হবে।
বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, আদালত হতে কালীপুর ইউনিয়নের রামদাশহাটের ব্যবসায়ী নুর আহমদের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে বিজ্ঞ আদালত একটি আদেশ দিয়েছেন। সাথে সাথে থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। লাশ উত্তোলন করা হবে।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ