ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশে শীর্ষে বাংলাদেশিরা


ইউরোপে অবৈধ প্রবেশ সামগ্রিকভাবে ২২ শতাংশ কমলেও, মধ্য ভূমধ্যসাগর রুট ব্যবহার করে ইউরোপে প্রবেশকারীদের মধ্যে বাংলাদেশিরা আবারও শীর্ষে রয়েছে। ইউরোপীয় সীমান্ত ও উপকূলরক্ষী সংস্থা ফ্রনটেক্সের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এ বছর জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫০,৮৫০ জন বাংলাদেশি এই বিপজ্জনক পথ পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছেছেন, যা গত বছরের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) ফ্রনটেক্সের পক্ষ থেকে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।
সংস্থাটি জানিয়েছে, শুধুমাত্র সেপ্টেম্বর মাসেই মধ্য ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন ৮ হাজার ৪৬ জন।
ফ্রনটেক্সের প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ১ লাখ ৩৩ হাজার ৪০০ জন অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন। কঠোর নজরদারি ও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার কারণে সামগ্রিকভাবে অবৈধ অনুপ্রবেশ কমেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। অবৈধ পথে ইউরোপে প্রবেশে শীর্ষ তিনটি অবস্থানে থাকা নাগরিকরা হলেন- বাংলাদেশি, মিসরীয় এবং আফগান।
মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় সাগর পথকে এখনও ইউরোপে অনিয়মিত প্রবেশের প্রধান রুট হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। পুরো ইউরোপে মোট অবৈধ প্রবেশকারীদের প্রায় ৪০ শতাংশই এই রুট দিয়ে ইতালিতে প্রবেশ করেছে।
ফ্রনটেক্সের মতে, এই রুটে আসা বেশিরভাগ অভিবাসীই বাংলাদেশি। যদিও অবৈধপথে ইউরোপে প্রবেশ সামগ্রিকভাবে হ্রাস পেয়েছে, তবে কিছু রুটে এর ব্যতিক্রম দেখা গেছে। পশ্চিম আফ্রিকান রুট দিয়ে অনুপ্রবেশ ৫৮ শতাংশ, পশ্চিম বলকান রুট দিয়ে ৪৭ শতাংশ, পূর্ব ইউরোপের স্থলসীমান্ত দিয়ে ৩৬ শতাংশ এবং পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় রুট দিয়ে ২২ শতাংশ হ্রাস পেলেও পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় রুটে অনিয়মিত প্রবেশ ২৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় রুটে অনিয়মিত প্রবেশ বেড়েছে ২৮ শতাংশ, যার বেশিরভাগই আলজেরিয়া থেকে যাত্রা করা অভিবাসী।
এদিকে, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, অবৈধ পথে ইউরোপে প্রবেশের সংখ্যা কিছুটা কমলেও মানবিক সংকট এখনও গভীর। সংস্থাটির তথ্যমতে, চলতি বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে কমপক্ষে ১ হাজার ২৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর এই সংখ্যা প্রমাণ করে, ইউরোপে পৌঁছানোর জন্য মানুষ এখনও জীবনের ঝুঁকি নিতে দ্বিধা করছে না।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, এ বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে কমপক্ষে ১,২৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফ্রান্স হয়ে ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে যুক্তরাজ্যে অবৈধ প্রবেশের চেষ্টা ১৪% বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইউরোপের সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি ও আফ্রিকার কিছু দেশের কঠোর নিয়ন্ত্রণের ফলে পাচারকারীরা নতুন কৌশল নিচ্ছে, যা অভিবাসীদের জন্য ঝুঁকি আরও বাড়াচ্ছে।
ভিওডি বাংলা/জা