• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

শিক্ষা ও গবেষণায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় বদ্ধপরিকর

রংপুর প্রতিনিধি    ১২ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩৪ এ.এম.
ছবি-ভিওডি বাংলা

আজ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। অবহেলিত উত্তরবঙ্গের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবির ফসল এই বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০৮ সালে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শিক্ষানুরাগীদের আন্দোলনের মাধ্যমে এ বিদ্যাপীঠের প্রতিষ্ঠা ঘটে। জন্মলগ্ন থেকেই নানা সংকট সত্ত্বেও উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে উন্নত জাতি গঠনের লক্ষ্যে পথচলা শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলী বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের অন্যতম সমৃদ্ধ গবেষণাধর্মী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাতিগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

তিনি পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরুর একটি উক্তি উল্লেখ করে বলেন, “দেশ ভালো হয় যদি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভালো হয়।” রাষ্ট্র ও সমাজ কাঠামোতে বৈষম্য ও নানাবিধ সমস্যার সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাই পথ দেখায়। উন্নত বিশ্বের আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবদান অনস্বীকার্য বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

উপাচার্য বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন এই ক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিলাম। তবে এখন সময় এসেছে সংকট পর্যালোচনা করে উত্তরণের পথে এগিয়ে যাওয়ার। বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য কেবল গবেষক তৈরি নয়, একই সঙ্গে দক্ষ জনসম্পদ গড়ে তোলা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেমন বলেছিলেন- ‘আমাদের উচ্চশিক্ষার সিঁড়ি আমরা নিজেরা গড়ে তুলিনি, গড়ে তুলেছে অন্যরা তাদের ধাঁচে ফেলে।’ এখন সময় এসেছে উপনিবেশিক কাঠামো ভেঙে আমাদের নিজস্ব গবেষণামুখী উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার।”

দায়িত্ব গ্রহণের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে গবেষণাধর্মী শিক্ষক নিয়োগ, গবেষণা বরাদ্দ বৃদ্ধি, মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উৎসাহ দিতে বৃত্তি প্রদান, ডিন অ্যাওয়ার্ড চালু এবং নিয়মিত রিসার্চ জার্নাল প্রকাশ করা হচ্ছে। পাশাপাশি একাডেমিক ভবন সম্প্রসারণ, আন্তর্জাতিক মানে শিক্ষক নিয়োগ, নতুন ভবন ও হল নির্মাণ, মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নসহ নানা উন্নয়ন কাজ চলমান।

ছাত্রাবাসে দলীয় রাজনীতি ও সিট বাণিজ্য পুরোপুরি বন্ধ করে শতভাগ ন্যায়সংগত নিয়মে সিট বণ্টন করা হচ্ছে। দরিদ্র ও প্রান্তিক পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তির ব্যবস্থা চালু হয়েছে। শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আইকিউএসি (IQAC)-এর উদ্যোগে নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কর্মশালা হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক সক্ষমতা বাড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সমাবর্তনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে, যা এ বছরই অনুষ্ঠিত হবে।

উপাচার্য জানান, গবেষণাকে আরও এগিয়ে নিতে বাংলা একাডেমির সহযোগিতায় বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের পৈতৃক বাড়িতে একটি গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এটি প্রতিষ্ঠিত হলে উত্তরবঙ্গের সাহিত্য-সংস্কৃতি ও শিল্প-গবেষণার ক্ষেত্রে এটি হবে একটি অনন্য একাডেমিক কেন্দ্র।

তিনি আরও বলেন, “গত ১৭ বছরে আমাদের সাবেক শিক্ষার্থীরা দেশে ও বিদেশে গবেষণা ও বিভিন্ন পেশায় সাফল্যের সঙ্গে কাজ করছেন। ২৪ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাঈদ আমাদেরই ছাত্র। বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার প্রতিবাদ ও আত্মত্যাগ গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে।”

উপাচার্য ড. শওকাত আলী বলেন, “আমাদের শিক্ষার্থীরা আবু সাঈদের মতো সাহস ও দৃঢ় প্রত্যয়ে এই বিদ্যাপীঠকে একটি গবেষণামুখী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করবে। তাদের শ্রম, মেধা ও সচেতন নেতৃত্বে গড়ে উঠবে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।”

ভিওডি বাংলা/জা

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
চরফ্যাশনে ইয়াবাসহ বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার
চরফ্যাশনে ইয়াবাসহ বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার
পাংশায় সাংবাদিকদের সাথে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশীর মতবিনিময়
পাংশায় সাংবাদিকদের সাথে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশীর মতবিনিময়
নাগরপুরের টাইফয়েড ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন উদ্বোধন
নাগরপুরের টাইফয়েড ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন উদ্বোধন