ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান ছিল অনিবার্য: চিফ প্রসিকিউটর


ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্রমান্বয়ে দানবে পরিণত হওয়ার কারণেই ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান অনিবার্য হয়ে পড়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
রোববার (১২ অক্টোবর) শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, “গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার ধাপে ধাপে দানবীয় রূপ নিয়েছিল। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়। এরপর গুম-খুনের সংস্কৃতি চালু করে, নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে তত্ত্বাবধান ব্যবস্থা বাতিল করে। দেশে দুর্নীতি সর্বগ্রাসী রূপ নেয়।”
তিনি আরও বলেন, “জনগণকে নির্যাতন, হত্যা ও ভয়ভীতির রাজত্ব কায়েম করাই ছিল তাদের লক্ষ্য। এই দানবীয় শাসনব্যবস্থা এক পর্যায়ে তরুণ প্রজন্মের ওপর সর্বাত্মক আক্রমণ চালায়।”
এর আগে গত বুধবার মামলার শেষ সাক্ষী (৫৪তম) তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরা শেষ হলে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়। মামলায় শহীদ আবু সাঈদের পিতাসহ স্বজনহারা পরিবারের সদস্য ও আন্দোলনের নেতাদের মধ্যে ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এই মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস.এইচ. তামিম শুনানি করেন। পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন এবং রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ উপস্থিত ছিলেন।
গত ১০ জুলাই এই মামলায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। পরে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করলে সেটি মঞ্জুর করা হয়।
এই মামলাসহ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা চলমান রয়েছে। একটি গুম-খুনের ঘটনায় এবং অন্যটি শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, দলীয় ক্যাডার, প্রশাসনের একটি অংশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার চলছে।
ভিওডি বাংলা/জা