অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি লেবার পার্টির


বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেছেন, গুম, খুন, নির্যাতন ও নিপীড়নের ভয়াবহ অধ্যায় বাংলাদেশ ইতিহাসের এক কলঙ্কজনক পর্ব। ফ্যাসিবাদী সরকারের ছত্রছায়ায় রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার কিছু বিপথগামী কর্মকর্তার হাতে শত শত নিরীহ নাগরিকের প্রাণহানি ও নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা মানবতার বিরুদ্ধে ভয়াবহ অপরাধ। এই নৃশংস অপরাধের দায় কোনো প্রতিষ্ঠান নয়, বরং সংশ্লিষ্ট অপরাধে জড়িত ব্যক্তি ও তাদের রাজনৈতিক প্রভুদের ওপর বর্তায়।
রোববার (১২ অক্টোবর ) এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান এ কথা বলেন।
ডাঃ ইরান বলেন, জনগণ জানে- এই গুম-খুনের নীলনকশা ছিল একটি স্বৈরাচারী রাজনৈতিক শাসনের অংশ, যার উদ্দেশ্য ছিল বিরোধী কণ্ঠ রোধ করা, গণতন্ত্রের শিকড় উপড়ে ফেলা এবং জাতিকে ভয় ও আতঙ্কের রাজ্যে আবদ্ধ রাখা। এই অপরাধে জড়িত যারা, তারা কেবল মানবাধিকার লঙ্ঘন করেনি; তারা রাষ্ট্রের মর্যাদা, সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি এবং বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সুনামকে কলঙ্কিত করেছে।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী একটি পেশাদার, দেশপ্রেমিক ও ত্যাগী প্রতিষ্ঠান। জাতির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তাদের অবদান অনন্য। কিন্তু ফ্যাসিবাদের সময়কালে কিছু ব্যক্তি ‘প্রতিষ্ঠানের ছায়া’ ব্যবহার করে যে অপরাধ করেছে, তাদের দায় কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠান হিসেবে সেনাবাহিনীর নয়। বরং সেনাবাহিনীর মর্যাদা রক্ষার স্বার্থেই এই অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ লেবার পার্টি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, ন্যায়বিচারই হতে পারে অতীতের ভুল সংশোধনের একমাত্র পথ। গুম, খুন ও মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানের বিচার কার্যক্রম শুরু করতে হবে। এদের বিচার বিলম্বিত হলে রাষ্ট্রে দায়মুক্তির সংস্কৃতি আরও গভীর হবে এবং জনগণের আস্থা চিরতরে ক্ষুণ্ণ হবে।
ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, লেবার পার্টি গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রশ্নে আপোষহীন। আমরা চাই- সেনাবাহিনীসহ সকল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে জবাবদিহিমূলক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা হোক। কোনো ব্যক্তি যদি তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে জনগণের ওপর নির্যাতন চালায়, সে যেই প্রতিষ্ঠানেরই হোক না কেন, তাকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এই জাতি গুম-খুনের মতো ভয়াবহ অপরাধের পুনরাবৃত্তি আর দেখতে চায় না। তাই সময় এসেছে সত্য প্রকাশ, দায় নির্ধারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে ন্যায়বিচারের নতুন সূচনা করার। যাতে ভবিষ্যতে কোনো সরকার আর কখনো সেনাবাহিনীর মতো পবিত্র প্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক দমন-পীড়নের যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার সাহস না পায়।
বাংলাদেশ লেবার পার্টি দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করছে- গুম-খুন ও আয়না ঘরে মানবতা বিরোধী অপরাধে জড়িত সকল সেনা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে অবিলম্বে গ্রেফতার, বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকারের পুনরুদ্ধার ছাড়া বাংলাদেশে স্থায়ী গণতন্ত্র ও শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ