• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

সালমান শাহর মৃত্যুর মামলায় রিভিশন শুনানি শেষ

নিজস্ব প্রতিবেদক    ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:১৪ পি.এম.
সালমান শাহ-ছবি সংগৃহীত

চিত্রনায়ক মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহর মৃত্যু মামলার রিভিশন শুনানি শেষ হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মামলাটি আত্মহত্যা হিসেবে রায় দেওয়া হলেও, পরিবারের আপত্তি ও হত্যার অভিযোগের কারণে পুনরায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত পরিচালনা করে। পিবিআই তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে মৃত্যুকে আত্মহত্যা হিসেবে উল্লেখ করে।
 
সোমবার (১৩ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হকের আদালতে বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. ওবায়দুল্লাহ শুনানি শেষ করেন। আদালত এ বিষয়ে আদেশের দিন আগামী ২০ অক্টোবর ধার্য করেছেন। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে ওবায়দুল্লাহ বলেন, আমরা মামলার কিছু ডকুমেন্ট চেয়ে রিভিশন দায়ের করি। ২০২২ সাল থেকে আমরা শুনানি শুরু করি। আজকের দিনে এসে শুনানি শেষ হলো। আমরা শতভাগ আশাবাদী, আদালত আমাদের রিভিশন মঞ্জুর করবেন। এরপর তথ্যগুলো পর্যালোচনা করে আমরা মামলাটি পুনরায় তদন্তের আবেদন করবো।  
 
এদিন রিভিশন শুনানিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে উপস্থিত হন সালমান শাহের ভক্তরা। বিচারের দাবিতে তারা আদালত পাড়ায় মানববন্ধন করেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহ। সেসময় এ বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছিলেন তার বাবা প্রয়াত কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে মামলাটিকে হত্যা মামলায় রূপান্তরের আবেদন জানান তিনি। অপমৃত্যু মামলার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টি একসঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত। ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি। প্রতিবেদনে সালমান শাহ’র মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। ওই বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়। সে সময় সিআইডির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন মামলা দায়ের করেন।
 
২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। এরপর প্রায় ১১ বছর মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে ছিল। ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতের বিচারক বিকাশ কুমার সাহার কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। এ প্রতিবেদনে সালমান শাহ’র মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর সালমান শাহ’র মা নীলা চৌধুরী ছেলের মৃত্যুতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান এবং ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দেওয়ার আবেদন করেন। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নীলা চৌধুরী আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে নারাজি আবেদন দাখিল করেন। নারাজি আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জন তার ছেলে সালমান শাহ’র হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারেন।

মামলাটি এরপর র‌্যাব তদন্ত করে। তবে র‌্যাবের তদন্তের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১৬ সালের ১৯ এপ্রিল মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিশন মামলা করে। ২০১৬ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ ৬-এর বিচারক ইমরুল কায়েস রাষ্ট্রপক্ষের রিভিশনটি মঞ্জুর করেন এবং র‌্যাবকে মামলাটি আর তদন্ত না করার আদেশ দেন। এরপর থেকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)।

সর্বশেষ ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইর পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম ছয়শ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সেখানে জানানো হয়, ‘সালমান শাহ হত্যাকাণ্ডের শিকার হননি, পারিবারিক কলহের জেরে তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন।’ পরের বছর ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি খারিজ করে দেন আদালত। এই খারিজের বিরুদ্ধে সালমান শাহের মায়ের আইনজীবী ফারুক আহমেদ রিভিশন মামলা দায়ের করেন। এরপর ২০২২ সালের ১২ জুন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত রিভিশনটি গ্রহণ করেন।

প্রসঙ্গত, সালমান শাহ ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান। প্রথমে তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালে হত্যা মামলার আবেদন জানান। সিআইডি এবং পরবর্তীতে র‌্যাব ও পিবিআই তদন্তের মাধ্যমে সালমান শাহর মৃত্যুকে মূলত আত্মহত্যা হিসেবে চূড়ান্তভাবে ধরা হয়। ২০২১ সালে পিবিআইর প্রতিবেদন অনুযায়ী মামলাটি খারিজ করা হয়, যা নিয়ে তাঁর মায়ের পক্ষ রিভিশন আবেদন করেন।

ভিওডি বাংলা/জা

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান ছিল অনিবার্য: চিফ প্রসিকিউটর
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান ছিল অনিবার্য: চিফ প্রসিকিউটর
শেখ হাসিনা-কামালের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শুরু আজ
শেখ হাসিনা-কামালের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শুরু আজ
আমাদেরকে হত্যার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা
আমাদেরকে হত্যার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা