• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

৩৫ বছর পর চাকসু নির্বাচনে ভোটের উৎসব

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি    ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৫৫ পি.এম.
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু)। সংগৃহীত ছবি

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আগামীকাল বুধবার (১৫ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে এখন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা গেছে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা।

নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বুধবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সকাল থেকেই মোতায়েন থাকবে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য।

চাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন জানিয়েছেন, নির্বাচনকে ঘিরে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ভোটাররা নির্বিঘ্নে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

এবারের সপ্তম চাকসু নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৫১৬ জন। কেন্দ্রীয় সংসদের ২৬টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪১৫ জন প্রার্থী—যার মধ্যে ১৩টি প্যানেল ও বেশ কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫টি হল ও হোস্টেলে প্রতিটি হলে ১৪টি করে পদ রয়েছে, মোট ৪৯৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোটগ্রহণ হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদ ভবনের ১৫টি কেন্দ্রে ৬০টি কক্ষে।

নির্বাচনকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা পরিদর্শন করেন র‌্যাব-৭-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, “চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ঘিরে নিরাপত্তা নিয়ে বড় কোনো হুমকি নেই। শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে কোনো ঝুঁকি দেখা যাচ্ছে না। কেবল বাইরের কোনো উসকানি না এলে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব।” তিনি আরও জানান, নির্বাচনে র‌্যাবের আটটি টহল দল, এপিবিএন সদস্য, গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা ও অতিরিক্ত রিজার্ভ ফোর্স মোতায়েন থাকবে।

১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছে মাত্র ছয়বার। প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭০ সালে, আর সর্বশেষটি হয় ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। তৎকালীন আইনে প্রতি বছর নির্বাচনের বিধান থাকলেও এরপর থেকে তা আর অনুষ্ঠিত হয়নি।

১৯৭০ সালের প্রথম চাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের মোহাম্মদ ইব্রাহিম ভিপি এবং আবদুর রব জিএস নির্বাচিত হন। ১৯৭২ সালের নির্বাচনে ছাত্র ইউনিয়নের শামসুজ্জামান হীরা ভিপি ও জাসদ ছাত্রলীগের মাহমুদুর রহমান মান্না জিএস নির্বাচিত হন। ১৯৭৪ সালের নির্বাচনে জাসদ ছাত্রলীগের এস এম ফজলুল হক ও গোলাম জিলানী চৌধুরী যথাক্রমে ভিপি ও জিএস হন। ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে জাসদ ছাত্রলীগের মাজহারুল হক শাহ চৌধুরী ভিপি এবং ছাত্রলীগের জমির চৌধুরী জিএস নির্বাচিত হন। ১৯৮১ সালের নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের জসিম উদ্দিন সরকার ভিপি ও আবদুল গাফফার জিএস হন। সর্বশেষ ১৯৯০ সালের নির্বাচনে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের প্রার্থী জাতীয় ছাত্রলীগের নাজিম উদ্দিন ভিপি এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আজিম উদ্দিন আহমদ জিএস নির্বাচিত হন।

বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ১৪টি আবাসিক হল ও একটি হোস্টেল। এর মধ্যে নয়টি পুরুষ শিক্ষার্থীদের এবং পাঁচটি ছাত্রীদের জন্য। এই ১৫টি আবাসনের প্রতিটিতে থাকবে একটি করে ভোটকেন্দ্র।

ভিওডি বাংলা/ আরিফ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
আইবিএ দিয়ে আজ শুরু ঢাবির ভর্তিযুদ্ধ
আইবিএ দিয়ে আজ শুরু ঢাবির ভর্তিযুদ্ধ
ইবিতে গ্রীন ভয়েসের পরিচ্ছন্নতা অভিযান
ইবিতে গ্রীন ভয়েসের পরিচ্ছন্নতা অভিযান
দীর্ঘ অনুপস্থিতির অভিযোগে ইবি অধ্যাপক চাকরিচ্যুত
দীর্ঘ অনুপস্থিতির অভিযোগে ইবি অধ্যাপক চাকরিচ্যুত