ফেনীতে পাখির দোকানে ক্রেতার জমজমাট ভীড়


ছোট্ট দোকানঘরের দেয়ালজুড়ে লম্বা তাক। তাকের ওপর লোহার খাঁচায় নানা রঙের পাখি। বাজরিগার, লাভবার্ড, ককাটেল, গোল্ডেন পেইন, রেইনবো, প্রিন্স, প্যারেটসহ নানা পাখি। পাখিগুলো অনবরত কিচিরমিচির শব্দ করছে। দোকানে আসা দর্শনার্থীদের কেউ তা দেখছেন, কেউবা মুঠোফোনে ছবি তুলছেন।
দোকানের এক পাশে চেয়ারে বসে সেসব দৃশ্য দেখছিলেন আজাদ (৩৮) তিনি দোকানটির মালিক। ক্রেতা বা দর্শনার্থীরা কিছু জানতে চাইলে তিনি চেয়ার থেকে উঠে আসছেন, কথা বলছেন। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী কখনো পাখির খাঁচাগুলো নামিয়ে দেখাচ্ছেন, কখনো দর্শনার্থীর অনুরোধে মুঠোফোনে ছবি তুলে দিচ্ছেন, কখনোবা নিজেই খেলছেন পাখির সঙ্গে। আজাদের দোকানে পাখি আর ক্রেতার উপস্থিতিতে বেশ জমজমাট পুরো দোকান।
ফেনীর সেন্ট্রাল হাই স্কুল ও ফেনী মডেল হাইস্কুলের মাঝামাঝি তে জান্নাত একুরিয়াম এন্ড বার্ড নামে ফেনী ট্রাংক রোড থেকে লালপোল যেতে হাতের বামে তাকালেই চোখে পড়বে দোকানটি। নাম দেওয়া হয়েছে জান্নাত অ্যাকুরিয়াম অ্যান্ড বার্ড হাউজ সম্প্রতি এক দুপুরে দোকানটিতে গিয়ে এমন পরিবেশ দেখা যায়। কাজের ফাঁকে কথা হয় আজাদ এর সঙ্গে। আলাপে আলাপে জানান ছাত্রজীবন থেকে পাখির প্রতি তাঁর ভালোবাসা এবং সেখান থেকে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার গল্প।
আজাদ জানান, পাখির সঙ্গে তাঁর সখ্য ছোটবেলা থেকেই। বয়স যখন চার কি পাঁচ বছর, তখন শখের বশে এক জোড়া কবুতর কিনে নেন। কবুতর দুটি পুষে বড় করে তোলেন আজাদ । একসময় সেগুলো বাচ্চা দেয়। সেখান থেকে বড় হয় কবুতরের পালা । আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে আজাদ এর আগ্রহ। এর মধ্যে কিছু টাকা জমিয়ে কেনেন বিদেশি পাখি। এরপর সেখান থেকেই ধীরে ধীরে বড় হয় তাঁর পাখির সংগ্রহশালা। এরপর বয়স বাড়ার সঙ্গে চলে পাখি পালন ও পড়াশোনা।
ফেনীর পাচগাছিয়া দেন পাখির দোকান করেন গরুর খামার এভাবেই মিশে জান শখ থেকে পেশায়। পাখির প্রতি দুর্নিবার টানে নেশা থেকে দ্বিতীয় শাখা সেন্ট্রাল হাই স্কুল ও ফেনী মডেল হাই স্কুলের মাঝামাঝিতে জান্নাত একুরিয়াম এন্ড ব্রাডস এই দোকান। বতর্মানে এই দোকানই তাঁর আয়ের উৎস। টাকা উপার্জনের পাশাপাশি সময় কাটান প্রিয় পাখিদের সঙ্গে।.
আজাদ বলছিলেন, ‘ছোটবেলায় সেই কবুতর থেকে পাখি পালনের প্রতি যে ভালো লাগা তৈরি হয়েছে, তা ছাড়তে পারিনি কখনো। পরে নিজ থেকেই দোকান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। এখন ব্যবসার পাশাপাশি পাখিগুলোর কাছে থাকার সুযোগ পাচ্ছি।’
আজাদ এর বাসা ফেনীর পাছগাছিয়া বালিগাও এলাকায়। পরিবার নিয়ে থাকেন সেখানেই। প্রতিদিন সকাল নয়টায় দোকানে আসেন তিনি। থাকেন রাত ১০টা-১১টা পর্যন্ত। তাঁর দোকানে আছে বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য পাখি। দোকানে আসার পর থেকে তিনি নিজেই পাখিগুলোর দেখভাল করেন। পাখিগুলোকে খাওয়ান। পাখির প্রতি আমার টান সেই ছোটবেলা থেকে। পাখি পালা আমার কাছে অনেকটা নেশার মতো। সে জন্য অন্য কিছু না ভেবে পাখির ব্যবসায় নামি। এই যে দোকানে সারা দিন পাখির শব্দ, কিচিরমিচির ডাক বা ক্রেতাদের সমাগম; এসব আমার ভালো লাগে, মনকে আনন্দ দেয়।’
ভিওডি বাংলা/আদনান/এম