কুষ্টিয়ায়-৪ টি আসন:
বিএনপির মনোনয়ন মানেই জয়


কুষ্টিয়া জেলাকে “সাংস্কৃতিক রাজধানী” বলা হয় এবং এর পাশ দিয়ে পদ্মা, গড়াই, মাথাভাঙ্গা ও কালীগঙ্গা নদীর মতো অনেক নদী প্রবাহিত হয়েছে। এই জেলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির জন্য বিখ্যাত, যেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং লালন শাহ-এর মতো অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের স্মৃতি ও কর্ম জড়িত। এই অঞ্চল ভৌগোলিকভাবে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও মনোমুগ্ধকর। একই সাথে এটি দেশের অন্যতম প্রধান শিল্পাঞ্চল। এখানে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান। এ কারণে রাজনৈতিকভাবেও এটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ এলাকা।
গত বছর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই আসনের রাজনৈতিক চিত্র সম্পূর্ণ বদলে গেছে। বিএনপি-জামায়াতের দলীয় কার্যালয়গুলো এখন প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা। সামনেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সম্ভাব্য প্রার্থীরা সভা-সমাবেশ, মিছিল, উঠান বৈঠক ও পথসভার মাধ্যমে নিজেদের জনভিত্তি যাচাইয়ে ব্যস্ত। জেলাকে “সাংস্কৃতিক রাজধানী” বলা হয় এবং এর পাশ দিয়ে পদ্মা, গড়াই, মাথাভাঙ্গা ও কালীগঙ্গা নদীর মতো অনেক নদী প্রবাহিত হয়েছে।
কুষ্টিয়া জেলায় ৪- টি সংসদীয় আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৭ জন প্রার্থী বিএনপির মনোনয়নপত্র প্রত্যাশী। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য পুরোদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে সাংবিধানিক সংস্থা নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্বাচনকে সামনে রেখে, ইতোমধ্যে বিএনপির প্রার্থী বাছাই শুরু করেছে দলটি । সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ - নিজ নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা শুরু করেছেন। জনকল্যাণমূলক বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে নিজ নিজ দলের হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে আইনজীবীরাও, ব্যবসায়ীরাও পিছিয়ে নেই। শুধু জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি থেকে ধানের শীষের প্রার্থী হতে মাঠে রয়েছেন ১৭ জনের মতো নেতা। তারা নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। সিনিয়র থেকে শুরু করে তরুণ আইনজীবীরাও রয়েছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায়।
জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেতে চান এমন কয়েকজন প্রার্থীর সঙ্গে কথা হয় । তারা সংসদে আইন প্রণয়নসহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য এমপি হতে চান বলে জানান।
দৌলতপুর উপজেলা নিয়ে কুষ্টিয়া - ১ আসন, মিরপুর - ভেড়ামারা নিয়ে কুষ্টিয়া -২ আসন, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নিয়ে কুষ্টিয়া -৩ আসন, কুমারখালী - খোকসা উপজেলা নিয়ে গঠিত কুষ্টিয়া -৪ আসন।
এই আসন গুলোতে রয়েছে ৬৬ টি ইউনিয়ন পরিষদ, ৩ টি পৌর, সভা নিয়ে গঠিত ৪ টা সংসদিয় আসন। এখানে প্রায় ১৬ লাখ ৭৫ হাজার ২৯৪ জন ভোটার রয়েছে।
কোন- কোন আসনে বিএনপির কতজন মনোনয়ন প্রত্যাশী।
কুষ্টিয়া -১ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী, সাবেক সংসদ সদস্য, রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সম্পাদক আখতারুজ্জামান সজল, জাতীয়তাবাদী যুবদল ঢাকা মহানগর (উত্তর) আহ্বায়ক শরিফ উদ্দিন জুয়েল, ছাত্র দলের কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, হাসনাইন নাহিয়ান সজীব, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাইদুল ইসলাম পলাশ।
কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে মনোনয়ন প্রার্থী জাতীয়তাবাদী কেন্দ্রীয় আইনজীবী ফোরামের দপ্তর সম্পাদক, রাগীব রউফ চৌধুরী।মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের কার্য নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ও অবিভক্ত ঢাকা মহানগর মহিলা দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) আহসান হাবীব লিংকন বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী।
কুষ্টিয়া -৩ আসনে, জেলা বিএনপির সভাপতি, এডভোকেট কুতুব উদ্দিন আহমেদ , সাবেক সংসদ সদস্য, অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনকে, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকার,
কুষ্টিয়া -৪ আসনে, সাবেক সংসদ সদস্য, সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, কুমারখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি, নুরুল ইসলাম আনছার প্রামাণিক, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক, শেখ সাদী, কেন্দ্রীয় কৃষকদের সদস্য হাফেজ মঈনউদ্দিন, কুমারখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন।
কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্য-সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে কুষ্টিয়া জেলায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা এখন বেশি সংগঠিত ও শক্তিশালী। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছি। দল যাকে মনোনয়ন দেবে, আমরা তাকেই বিপুল ভোটে বিজয়ী করে সংসদে পাঠাব।
সাবেক সাংসদ বাচ্চু মোল্লা বলেন, “এ আসনে জয়-পরাজয় নির্ভর করবে মনোনয়ন নির্বাচনের উপর। দীর্ঘ ১৭ টি বছর আমি এই অঞ্চলে বিএনপিকে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছি। এমন কোন বিএনপি নেতা কর্মী বলতে পারবেনা যে আমি তাদের দুঃসময় পাশে ছিলাম না। নেতাকর্মীদের ভালোবাসায় আমি আজ নেতা হতে পেরেছি। আগামী সংসদ নির্বাচনে দলবল নির্বিশেষে সবাই আমাকে সাপোর্ট করবে এমন আশা আমি করি।
কুষ্টিয়া - ১ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহ- সম্পাদক আখতারুজ্জামান সজল বলেন, আমরা চাই একটি সুস্থ প্রতিযোগিতামূলক কর্মপরিবেশ, এতে প্রত্যেকেরই জয়ের সুযোগ থাকে। আমাদের মাঝে প্রতিযোগিতা থাকুক-যে প্রতিযোগিতা আমাদেরকে আরও যোগ্য, আরও নিবেদিত করে তুলবে।
প্রতিযোগিতা যেন কখনো ঘৃণার, হিংসার বা বিভেদের জন্ম না দেয় সেই দিকে লক্ষ রাখতে হবে। আমরা সবাই একই লক্ষ্যে কাজ করছি-ধানের শীষের বিজয়, মানুষের মুক্তি, মানুষের হাসি। তাই আসুন, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, ভালোবাসা ও ঐক্যের শক্তিতে এগিয়ে যাই। আমরা একসাথে কাজ করব, একসাথে জিতব, আর মানুষের হৃদয় জয় করব। শেষ পর্যন্ত জয় হবে ধানের শীষের-জয় হবে মানুষের।
ভিওডি বাংলা-মোশারফ হোসেন /জা