• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

সিরাজগঞ্জে মানবপাচার মামলায় এক নারীর ১৪ বছরের কারাদণ্ড

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি    ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:২০ পি.এম.
ছবি: ভিওডি বাংলা

সিরাজগঞ্জে নবজাতক শিশু চুরির ঘটনায় দায়ের করা মানবপাচার মামলায় এক নারীকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় আরও পাঁচ আসামিকে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় খালাস দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২০ অক্টোবর ) দুপুরে সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক বেগম সালমা খাতুন এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে আসামি মোছাঃ আলপনা খাতুন কে সিরাজগঞ্জকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ৭ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ১৪ (চৌদ্দ) বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

একইসঙ্গে আদালত আদেশ দেন জরিমানার অর্থ ভিকটিমের পরিবারকে প্রদান করতে হবে। আসামির বর্তমান বা ভবিষ্যতের সম্পদ থেকেও এ অর্থ আদায়যোগ্য হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।

এছাড়াও মামলার অপর আসামি মোছাঃ ছায়রন বেওয়া, মোছাঃ মিনা খাতুন, মোছাঃ মায়া খাতুন, মোঃ রবিউল ইসলাম সকলেই আলোকদিয়া গ্রামের বাসিন্দা। আদালত ২০১২ সালের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ৭/৮/১০(২) ধারার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস প্রদান করেন।

এ মামলার এজাহারে বাদী মোঃ মাজেদ আলী উল্লেখ করেন ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ রাতে তার স্ত্রী মোছাঃ সবিতা খাতুন (৩০)-কে প্রসব বেদনা উঠলে সাখাওয়াত মেমোরিয়াল হাসপাতাল, হাটিকুমরুলে ভর্তি করেন। পরদিন সকালে সিজার অপারেশনের মাধ্যমে সন্তানের জন্ম হয়।

ঐদিন বিকেলে এক অজ্ঞাত নারী বোরখা পরে হাসপাতালে প্রবেশ করে নবজাতককে কোলে নিয়ে আদর করতে করতে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে হাটিকুমরুল হাইওয়ে পুলিশ ও সলঙ্গা থানা পুলিশ যৌথ অভিযানে জানতে পারে, ওই নারী নবজাতকসহ আলোকদিয়া গ্রামের দিকে গেছে।

সলঙ্গা থানা পুলিশ তৎপর হয়ে আলোকদিয়া গ্রামের ছায়রন বেওয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নবজাতককে জীবিত উদ্ধার করে। একই স্থান থেকে মৃত অবস্থায় আরও একটি নবজাতক উদ্ধার করা হয়, যা ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকে চুরি হয়েছিল বলে পরবর্তীতে শনাক্ত হয়।

অভিযুক্তদের গ্রেফতারের পর তারা শিশু চুরির ঘটনা স্বীকার করে। তাদের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের মার্চে মানবপাচার ০৩/২০২১ মামলা দায়ের করা হয়।

আদালতের পর্যবেক্ষণ রায়ে বিচারক বেগম সালমা খাতুন বলেন, মানবিকতার পরিপন্থী এ ধরনের অপরাধ সমাজে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করে। শিশু চুরি ও পাচার একটি ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি। আদালত এ ধরনের অপরাধে শূন্য সহনশীলতা অবলম্বন করবে।

তিনি আরও বলেন, আসামি আলপনা খাতুনের বিরুদ্ধে উপস্থাপিত সাক্ষ্য, আলামত ও তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্ত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২ সিরাজগঞ্জের পাবলিক প্রসি‌কিউটর মোঃ মাসুদুর রহমান মাসুদ বলেন, এই মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে কাজ করেছেন। একটি শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, যা মামলার প্রমাণকে আরও দৃঢ় করেছে। আদালতের এই রায় মানবপাচার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: ডা.জাহিদ হোসেন
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: ডা.জাহিদ হোসেন
সন্ত্রাস দিয়ে জনসমর্থন ও জনভিত্তিকে দমন করা যাবে না: এ কে আজাদ
সন্ত্রাস দিয়ে জনসমর্থন ও জনভিত্তিকে দমন করা যাবে না: এ কে আজাদ
জোবায়েদ হত্যার প্রতিবাদে গৌরীপুরে বিক্ষোভ
জোবায়েদ হত্যার প্রতিবাদে গৌরীপুরে বিক্ষোভ