জার্মানিতে রেকর্ড সংখ্যক মানবপাচার, ভুক্তভোগীর অর্ধেকই বিদেশি নাগরিক


ইউরোপের দেশ জার্মানিতে ২০২৪ সালে রেকর্ড সংখ্যক মানবপাচারের ঘটনা ঘটেছে। দেশটির পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর অন্তত ৮৬৮টি মানবপাচারের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। ভুক্তভোগীদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি এসেছেন পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলো থেকে।
মানবপাচারবিরোধী ফেডারেল কোঅর্ডিনেশন গ্রুপ (কেওকে) জানিয়েছে, প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে। পাচারের অনেক ভুক্তভোগী ভয়ের কারণে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন না, ফলে প্রকৃত পরিসংখ্যান নির্ণয় কঠিন হয়ে পড়ে।
ফেডারেল ক্রিমিনাল পুলিশ অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে মানবপাচার সংক্রান্ত ৬৫০টি মামলার বিচার চলেছে, যার মধ্যে ৫৭৬টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে- যা একটি নতুন রেকর্ড। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ৫০৯।
কেওকে বলছে, জার্মানিতে মানবপাচারের বেশিরভাগ ঘটনাই যৌন শোষণ ও জোরপূর্বক দেহব্যবসা সম্পর্কিত। ফলে নারীরাই বেশি ভুক্তভোগী। বিদেশিদের মধ্যে চীনের নাগরিকদের ওপর ৫৫টি ঘটনা, বুলগেরিয়ার ৫৩টি ও রোমানিয়ার ৪৭টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
অভিবাসন সংক্রান্ত গবেষণা প্ল্যাটফর্ম ‘মেডিয়েনডিনস্ট ইন্টেগ্রেশন’ জানায়, সব ধরনের পাচারের (যৌন, শ্রম ও জোরপূর্বক বিয়ে) এক-তৃতীয়াংশ ভুক্তভোগী ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশ থেকে এসেছেন, এক-তৃতীয়াংশ ইইউ দেশ থেকে এবং এক-তৃতীয়াংশ জার্মান নাগরিক।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ও ওয়াক ফ্রি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী অন্তত ৫ কোটি মানুষ মানবপাচারের শিকার হয়েছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পাচারের শিকার অনেকেই বুঝতেই পারেন না যে তারা শোষণের শিকার। আইনি জটিলতা, আবাসিক অবস্থার অনিশ্চয়তা ও প্রতিশোধের ভয়-এই কারণগুলো ভুক্তভোগীদের চুপ থাকতে বাধ্য করে।
জার্মান সংবাদমাধ্যম টাগেসশাউ জানিয়েছে, অনেক ভিয়েতনামী শিক্ষানবিশ জার্মানিতে এসে নিখোঁজ হয়ে যান। ধারণা করা হচ্ছে, প্রশিক্ষণের আড়ালে তারাও পাচারের শিকার হচ্ছেন।
সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস, টাগেসশাউ, কেওকে, জার্মান ফেডারেল পুলিশ, আইএলও
ভিওডি বাংলা/জা