ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীর বিয়ে বন্ধের জন্য হাইকোর্টে রিট


ধর্ষণের শিকার নারীর সঙ্গে তার ধর্ষকের বিয়ে বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) জনস্বার্থে সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা অ্যাডভোকেট মো. রাকিবুল হাসান এই রিট দায়ের করেন। তিনি বলেন, ‘‘বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি আসিফ হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে চলতি সপ্তাহে রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে।’’
রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, পুলিশ, কারা অধিদফতর ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিটে উল্লেখ করা হয়েছে, সম্প্রতি কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকে গায়ক মাইনুল আহসান নোবেলের সঙ্গে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণ মামলার বাদীর বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। মামলাটি বিচারাধীন থাকলেও নোবেলের পক্ষ থেকে আদালতে লিখিতভাবে বিয়ের অনুমতি চাওয়া হয় এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নির্দেশে কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।
‘আসামি নোবেলের পক্ষ থেকে আদালতে লিখিতভাবে বাদীকে বিয়ে করার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়। পরবর্তী সময় বাদী ও আসামি উভয় পক্ষের সম্মতিতে বিয়ের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। সংবাদমাধ্যমগুলোতে ফলাও করে ছাপানো হয়েছে সংবাদটি। কিছু সংবাদ পরিবেশনের ধরন দেখে মনে হয়েছে, যেন তারা নোবেলের কোনও সাফল্যের সংবাদ পরিবেশন করছে। সংবাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নোবেলের বিভিন্ন ভঙ্গিতে তোলা ঝলমলে ছবি।’
বাদীপক্ষের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, “যদি আইন তার অবস্থান থেকে সরে যায় না, তবে ধর্ষণ অপরাধের জায়গাতেই থেকে যাবে এবং সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হবে।”
‘কখনও সালিশ কিংবা আপস-মীমাংসার মাধ্যমে, কখনও চড়-থাপ্পড় দিয়ে, কখনও জরিমানা করে, আবার কখনও বিয়ের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া থেকে পার পেয়ে যায় অপরাধীরা। এ ধরনের দৃষ্টান্ত দেখে আশকারা পেয়ে অনেক অপরাধী এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটায়। কারা কর্তৃপক্ষের আয়োজনে কারাগারের গেটে তাই বিয়ের এ ধরনের আয়োজন অত্যন্ত নিন্দনীয়। ধর্ষণের শিকার নারীর সঙ্গে বিয়ে দিলেই ধর্ষণের অপরাধ কমে যায় না। অপরাধের জায়গাতেই থাকে। তাই বাদীপক্ষ চাইলেও আইন তার অবস্থান থেকে সরে যেতে পারে না। যা অপরাধ, তা অপরাধই।’
ভিওডি বাংলা/জা