নীলফামারীতে ৬ জন শিক্ষকের বিদ্যালয়ের ৪ জন শিক্ষার্থী


নীলফামারীর পল্লীতে ৬ জন শিক্ষকের বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে ৪ জন শিক্ষার্থী। এই বিদ্যালয়টির অবস্থান সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নে। বিদ্যালয়টির নাম ডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ঝকঝকে তকতকে বিদ্যালয় ভবন হলে শিক্ষার্থী না থাকায় এটি মাকাল ফলের মতো অবস্থা হয়েছে। বিদ্যালয়ের মাঠটি এলাকাবাসী ঘুটি ও লাকড়ি শুকানোর কাজে ব্যবহার করছে। অবশ্য গ্রামবাসীদের অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন ইবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলোর অবস্থা আরো খারাপ।
এই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে নতুন করে ভাবা দরকার বলে তারা দাবি তুলেন। সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, তৃতীয় শ্রেণিতে ক্লাশ নিচ্ছেন একজন শিক্ষক, সেখানে শিক্ষার্থী উপস্থিত আছে মাত্র ২ জন। চতুর্থ শ্রৈণির অবস্থাও একই। ক্যামেরার সামনে আসতে ও নাম বলতে ওই দুই শ্রেণির শিক্ষক অপারগতা প্রকাশ করেন। মৌখিকভাবে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮৯ জন বলা হলেও কাগজ কলমে আছে ৭৯ জন।
আর গড়ে উপস্থিত থাকে সকালের শিফট ২ থেকে ৬ জন আর দুপুরে শিফটে ২ থেকে ৪ জন। তবে সব শিক্ষার্থীর নামে উপ-বৃত্তি চালু রয়েছে। সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ১ম ও ২য় শ্রেণির ক্লাশ। আর বেলা এগারোটা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত তৃতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাশ চলে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী উপস্থিতির বিষয়ে কথা হয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন শাহ্র সঙ্গে। তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মতো এনজিও পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। পাড়ার মহিলারা এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ায় তাদের চাকুরী বাচাতে আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গিয়ে ক্লাশ করায়। এছাড়াও পাশে ইসলামী কিন্ডারগার্টেন নামে একটি মাদ্রাসা আছে সেই মাদ্রাসার শিক্ষকেরা দ্বিনী শিক্ষা দেওয়ার নামে ১ম ও ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সকালবেলা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যায়। ফলে এই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি আশাব্যঞ্জক নয়। অবশ্য শিক্ষার্থী উপস্থিতির সংখ্যা বাড়াতে অভিভাবক ও মা সমাবেশ করা হয়েছে। কথা হয় সৈয়দপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তার দেয়া তথ্য মতে ওই বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণিতে ১৯ জন, ২য় শ্রেণিতে ১৫ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে ১৮ জন, ৪র্থ শ্রেণিতে ১৫ জন, পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ১২ জন। সব মিলে যোগফল দাড়ায় ৭৯ জনে।
শিক্ষার্থীরা উপস্থিতি ও কর্মরত শিক্ষক সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই বিদ্যালয়ে ৬ জন শিক্ষকের মঞ্জুরী থাকলেও কর্মরত আছে ৪ জন। আর শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম বিষয়ে তিনি বলেন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ