• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

নির্বাচন পেছাতে চায় কিছু দল: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক    ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:১০ পি.এম.
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

‘কোনো কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচন সঠিক সময় না হয় সেই চেষ্টা করছে’ বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এক গ্রন্থ প্রকাশনার আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের যে অন্তর্বর্তী সরকার আমরা তাকে সহযোগিতা দিয়ে, সহযোগিতা করে আমরা একটা জায়গায় আসার চেষ্টা করছি যে, একটা নির্বাচন যেন করা যায়। আমি কোন দলকে দোষারোপ করতে চাই…কোন ব্যক্তিগত দোষারোপ করতে চাই না। কিন্তু হতাশার সঙ্গে লক্ষ্য করি যে, কোন কোন রাজনৈতিক দল নির্বাচন যেন পিছিয়ে যায়, নির্বাচন যেন সঠিক সময় না হয় তার চেষ্টা করছে। এটা ঠিক হচ্ছে না। 

এখন দ্রুত একটা রাজনৈতিক সরকার দরকার উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কারণ দেশের অর্থনীতি, দেশের রাজনীতি শিক্ষা সবকিছু নির্ভর করছে আগামীতে একটি নির্বাচিত সরকার সেই ব্যবস্থাকে সামনে নিয়ে আসবে। আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই যে, জাতীয় সংস্কার কমিশন তারা অতি অল্প সময়ের মধ্যে অন্তত কিছু সংস্কারের কাজ শেষ করতে পেরেছেন। এটার প্রয়োজন ছিল পরিবর্তনের পরে।’

কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মুক্তিযোদ্ধা মিলনায়তনে বিএনপির উপ-প্রকাশনা কমিটির প্র্রকাশনায় ‘মহাকালের মহানায়ক শহীদ জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষ্যে এই আলোচনা সভা হয়। ৬৪০ পৃষ্ঠার এই গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম ও আবদুল হাই শিকদার। হামিদুল ইসলামে প্রচ্ছদে গ্রন্থটি মূল্য রাখা হয়েছে দুই হাজার টাকা।

‘সংস্কার সব বিএনপির হাত ধরেই’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব তিনি ’২২ সালে যে ৩১ দফা দিয়েছিলেন তারই ধারাবাহিকতায় কিন্তু আমরা এই সংস্কারগুলো দিয়েছি। ম্যাডাম (বেগম খালেদা জিয়া) দিয়েছিলেন ২০১৬ সালে ভিশন-২০৩০ আর আমাদের নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দিয়েছিলেন ১৯ দফা কর্মসূচি। সব কিছু মিলিয়ে এসব সংস্কার।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির জন্ম তো সংস্কারের মধ্যে, সংস্কার দিয়েই আমরা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা  থেকে বহুদূরীয় শাসন ব্যবস্থায় প্রেসিডেন্ট জিয়া নিয়ে এসেছিলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফ্রিডম অফ প্রেস প্রেসিডেন্ট জিয়া দিয়েছিলেন, জনগণের মৌলিক স্বাধীনতার অধিকার গুলোর স্বাধীনতা প্রেসিডেন্ট জিয়া দিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া প্রেসিডেন্সিয়াল ফর্ম অফ গভমেন্ট থেকে পার্লামেন্টারি ফম গভমেন্টে নিয়ে এসেছিলেন, মেয়েদের লেখাপড়া দশম শ্রেনী পর্যন্ত  বিনা খরচ লেখাপড়ার ম্যাডাম করেছিলেন, মেয়েদেরকে চাকরি দেওয়া, মহিলা অধিদপ্তর করা …সব সব তো বিএনপি এবং ম্যাডামের কাছে দেয়া। অথচ এমনভাবে কথা বলা হয় যে, বিএনপি একটা ভিলেন কিছু কিছু লোক বলার চেষ্টা করেন আমি বিস্মিত হই। আমি দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, বাংলাদেশে যা কিছু ভালো হয়েছে সব বিএনপির হাত দিয়ে হয়েছে, জনগণ হাত হয়েছে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাত দিয়ে হয়েছে।’

‘জিয়ার নাম মুছে ফেলতে পারেনি’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জিয়ার নাম মুছে পড়ার চেষ্টা করেছিল আওয়ামী লীগ। জিয়ার মাজার পর্যন্ত তুলে নিয়ে যাবে, তার নাম গন্ধ থাকবে না…. তাই করেছিল না। পারে নাই। কারণ সত্যিকার অর্থেই জিয়াউর রহমান ক্ষণজন্মা আল্লাহ যাকে পাঠিয়েছেন মানুষের কল্যাণের জন্য তাকে কি এত সহজেই ছুড়ে ফেলা যায়? যায় না।’

কিউবার প্রেসিডেন্ট কাস্ট্রোর আদালতের দেয়া বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘কাস্ট্রো আদালতে বলেছিলেন, কনডেম মি ডাজেন্ট মেটার, হিস্ট্রি উইল এবজোর্ভ। শহীদ জিয়াউর রহমানকে ইতিহাস ধারণ করেছেন তাকে কেউ কন্ডেম করলে কিছু চায় আসবে না।’

‘তারেকের নেতৃত্বে প্রশংসা করলেন ফখরুল’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তারেক রহমান আমাদের নেতা যিনি আজকে নতুন করে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করবার জন্য কাজ করছেন। তিনি সেই একই ধারার(জিয়াউর রহমান-খালেদা জিয়া) নেতা। আমার এখনো মনে আছে যে, তিনি চীনে একবার গিয়েছিলাম ম্যাডামের সঙ্গে, আমরাও ছিলাম। ওই সময়ে প্রচন্ড শীত ছিলো সেজন্য গ্রেট হলেরর ভেতরে ম্যাডামকে গার্ড অফ অনার দেয়ার অনুষ্ঠানটি হয়। ম্যাডাম যখন চীনের প্রধানমন্ত্রীকে আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন… যখন তারেক রহমানের সামনে এসে বললেন, হি ইজ মাই সান( আমার ছেলে)। তখন চীনের প্রধানমন্ত্রী তার(তারেক রহমানের) হাতটা শক্ত করে ধরে ঝাঁকিয়ে বললেন, ‘কেরি অফ দি ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড ফাদার এন্ড মাদার… আজকে তারেক রহমান সাহেব সেই পতাকা তুলে ধরেছেন যে পতাকা হচ্ছে স্বাধীনতার পতাকা, যে পতাকা হচ্ছে এই দেশের মানুষের অধিকারের পতাকা, গণতন্ত্রের পতাকা, উন্নয়নের পতাকা।ইনশাল্লাহ আমরা তারেক রহমানের নেতৃত্বে নিশ্চয়ই এই বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত করব এবং গণতন্ত্রকে আরো উজ্জীবিত করব। অর্থনীতিকে গণতান্ত্রিকীকরণ করব।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও প্রকাশনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও প্রশিক্ষন বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশররফ হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য্ অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুল হাই শিকদার, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ আলমগীর পাভেল, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, জাসাসের সাবেক সভাপতি রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী, কলামিস্ট সাখাওয়াত হোসেন সায়ান্থ, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত বক্তব্য রাখেন।

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে ঐক্য ভাঙা যাবে না: দুদু
দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে ঐক্য ভাঙা যাবে না: দুদু
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রধান শিক্ষা হলো পরিবর্তন : সালাহউদ্দিন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রধান শিক্ষা হলো পরিবর্তন : সালাহউদ্দিন
১৫ বছরের কর্মকর্তারা ১৫ মাসে বদলানো সম্ভব নয়: মঈন খান
১৫ বছরের কর্মকর্তারা ১৫ মাসে বদলানো সম্ভব নয়: মঈন খান