বিরামপুরে তৃণমূল সংঘর্ষ, লুটপাট-অগ্নিসংযোগে আহত ১০, নিহত ১

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বিরামপুরে পূর্ব শত্রুতাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন এবং নাসির মিয়া (৪২) নামের একজন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) ভোর পাঁচটা থেকে সকাল নয়টা পর্যন্ত বিরামপুর খালপাড় এলাকায় হারুন গ্রুপ ও ইকবাল গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ১০টি বসতঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। কয়েকটি ঘরে অগ্নিসংযোগও করা হয়। এতে কোটি টাকার বেশি মূল্যের মালামাল লুট বা পুড়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনার পরপরই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি যৌথ টহলদল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিরামপুর এলাকার হারুন গ্রুপ ও ইকবাল গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। সাম্প্রতিক সময়ে ‘জোয়ারের ২০০ টাকা’ লেনদেন নিয়ে নতুন করে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এর জেরেই শনিবার ভোরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রথমে বচসা, পরে তা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়।
সংঘর্ষে লাঠি-সোটা, দেশীয় অস্ত্র ও পেট্রোলবোমা ব্যবহার করা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালে ঘরবাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও মূল্যবান আসবাবপত্র লুট করা হয়। একপর্যায়ে কয়েকটি ঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এতে আগুনে পুড়ে যায় নাসির মিয়ার ঘরসহ কয়েকটি বসতবাড়ি।
আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত নাসির মিয়ার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য একই হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম বলেন, “পূর্ব শত্রুতার জেরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আমরা একজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, “এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জড়িতদের শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অন্যদিকে, স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন যে, বিরোধের বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের জানানো হলেও আগেভাগে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় পরিস্থিতি এ পর্যায়ে গড়িয়েছে। এখনো অনেক মানুষ আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছেন।
সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও নিরাপত্তা দাবি করেছেন।
এদিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা সকাল থেকে বিরামপুরের বিভিন্ন এলাকায় টহল অব্যাহত রেখেছেন। এলাকাজুড়ে উত্তেজনা থাকলেও ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ







