অজ্ঞাত উদ্ধার আরও ৯ মরদেহ
খুলনায় দেড় মাসে ২২ হত্যাকাণ্ড

অপরাধ আর হত্যার নগরে পরিণত হচ্ছে শিল্পনগরী খুলনা। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ঝরছে প্রাণ। গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে জনপদ, আবার কোথাও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে লুটিয়ে পড়ছে মানুষ। মাত্র দেড় মাসেই খুলনা মহানগর ও জেলায় ঘটেছে ২২টি হত্যাকাণ্ড, রহস্যজনকভাবে উদ্ধার হয়েছে আরও ৯ মরদেহ। এছাড়াও গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।
একের পর এক হত্যাকাণ্ডে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে খুলনা। বন্দুকের গুলি বা ধারালো অস্ত্রে প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ, দীর্ঘ হচ্ছে আহতদের তালিকা। আইনের কঠোর প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের দাবি এলাকাবাসীর। যদিও পুলিশের দাবি, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছেন তারা।
পুলিশের তথ্যমতে, গত দেড় মাসে খুলনা মহানগর ও জেলায় ২২টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। রহস্যজনক মৃত্যুর পর মরদেহ উদ্ধার হয়েছে আরও ৯ জনের। এছাড়া গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। মাদক ব্যবসা, আধিপত্য বিস্তার, রাজনৈতিক কোন্দল কিংবা পারিবারিক বিরোধে ঘটছে এসব নৃশংসতা। মায়ের পাশে ঘুমিয়ে থাকা সন্তানকে জানালার বাইরে থেকে গুলি করে হত্যা, এমনকি ছেলের হাতে বাবা নিহতের ঘটনাও ঘটেছে এই নগরে।
থানাগুলোর পরিসংখ্যান বলছে ২৫ অক্টোবর খানজাহান আলী থানা, ২৩ অক্টোবর লবণচরা, ২১ অক্টোবর ফুলতলা, ২১ অক্টোবর তেরখাদা, ১৯ অক্টোবর রূপসা, ১৭ অক্টোবর দাকোপ, ১৬ অক্টোবর পাইকগাছা, ১১ অক্টোবর দিঘলিয়া, ৯ অক্টোবর খালিশপুর, ৬ অক্টোবর বটিয়াঘাটা, ৬ অক্টোবর সদর থানা, ৩ অক্টোবর সদর থানা,
১ অক্টোবর দৌলতপুর, ২৯ সেপ্টেম্বর জাবুসা, ২৭ সেপ্টেম্বর সদর থানা, ২৬ সেপ্টেম্বর দাকোপ, ২৪ সেপ্টেম্বর সোনাডাঙা, ২৩ সেপ্টেম্বর লবণচরা, ২০ সেপ্টেম্বর ফুলতলা, ৮ সেপ্টেম্বর দাকোপ, ৫ সেপ্টেম্বর রূপসা, ৪ সেপ্টেম্বর রূপসা এলাকায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
এর মধ্যে বেশ কিছু ঘটনার রহস্য এখনো উদঘাটন হয়নি। সংশ্লিষ্টদের মতে, সন্ত্রাস দমনে প্রয়োজন আইনের কঠোর প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন।
খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, দেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। রাজনৈতিক বা অন্য কোনো কারণে পুলিশ যথাযথভাবে কাজ করতে পারছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংস্কার যেমন প্রয়োজন, তেমনি মানুষের মানসিকতারও পরিবর্তন দরকার।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানিয়া সুলতানা বলেন, বিভিন্ন সময় যে মৃত্যুর খবর আসছে এটি সামগ্রিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগজনক। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সুযোগে এক শ্রেণির মানুষ অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে। শুধু পুলিশের দায় দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
তবে পুলিশের দাবি, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে তারা সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ রাশিদুল ইসলাম খান বলেন, এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। জড়িতদেরও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচপি/ এমএইচ







