সাজিদ হত্যার বিচার দাবিতে ইবিতে প্রতীকী লাশ মিছিল

সাজিদ আব্দুল্লাহ হত্যার ১০০ তম দিন পেরিয়ে গেলেও দোষীদের চিহ্নিত করতে পারেনি প্রশাসন। টালবাহানা না করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে খুনিদের চিহ্নিতকরণ এবং শাস্তির দাবিতে প্রতীকী লাশ মিছিল করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।
রোববার (২৬ অক্টোবর) বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে শাহ আজিজুর রহমান হল সংলগ্ন পুকুরপাড় থেকে প্রতীকী লাশ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রশাসন ভবনের নিচে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা। দ্রুততম সময়ে বিচার নিশ্চিতে প্রশাসনকে সর্বোচ্চ ৭ দিনের আলটিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সাবেক সহসমন্বয়ক তানভীর মাহমুদ মন্ডল বলেন, ‘আগস্ট পরবর্তী সময়ে আশা ছিলো আওয়ামী সরকার যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি করেছিলো সেখান থেকে বের হতে পারব। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয় জুলাই যোদ্ধা সাজিদ হত্যার বিচার এখনো হয়নি। বেতন পে স্কেলের জন্য ব্যক্তি স্বার্থে ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ করে শিক্ষকরা মানববন্ধন করেছে কিন্তু একজন শিক্ষার্থী হত্যার পরেও তারা আমাদের আন্দোলনের কাতারে আসতে পারেনি। সাজিদ হত্যার বিচার নাহলে যে প্রশাসনকে শিক্ষার্থীরা চেয়ারে বসিয়েছে তাদেরকে ঢাকার টিকিট ধরিয়ে দিবে।’
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত বলেন, ‘প্রশাসনের চামড়াটা গন্ডারের মতো এত পুরু যে মনে হচ্ছে আল্টিমেটাম, তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ, ক্লাস-পরীক্ষা বাদ দেয়া এটা আপনাদের কিছুই আসে যায় না। আমরা শুনতে পাচ্ছি সিআইডি ঘটনার খুব কাছাকাছি চলে গেছে। তারা নাকি সাসপেক্টও করেছেন। কিন্তু ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল হবে বলে প্রশাসন তাদেরকে গ্রেফতারের অনুমতি দিচ্ছে না। কোন জুজুর ভয়ে প্রশাসন তাদেরকে গ্রেফতার করার অনুমতি দিচ্ছে না তা আমরা জানতে চাই।’
শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আবু ইউসুব আলী বলেন, ‘শহীদ সাজিদ আব্দুল্লাহ'র হত্যার ১০০ দিন পেরিয়ে ১০১ তম দিনে পদার্পণ করলেও এখন পর্যন্ত আমরা খুনিদের গ্রেফতার দেখতে পাইনি । প্রশাসনকে বলতে চাই আপনারা যদি ভেবে থাকেন আমরা সাজিদ আব্দুল্লাহকে ভুলে যাবো তাহলে আপনারা অনেক বড় ভুল করছেন। রাজপথে নেমেছি সাজিদ হত্যার বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছেড়ে যাব না। সাজিদ হত্যার বিচার যদি না করা হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাবোধ করবে না।’
ইবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, ‘সাজিদ হত্যার আজকে ১০১তম দিন হয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অথর্বের মতো নিশ্চুপ আছে। সাজিদ হত্যার পর সিসিটিভি ফুটেজ কিভাবে হারিয়ে যায় সেদিকে প্রশাসনের কোনো খেয়াল নেই। সিআইডিকে তদন্তভার দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তারা বারবার সময় ক্ষেপণ করছে। আজকে সিআইডি'র এসপি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসতে চেয়েছেন। আজকেই শেষবার, এরপরে আমরা আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সিআইডি'র সঙ্গে বসতে যাবো না। আমরা ৭ দিন সময় দেবো, এর মধ্যে খুনিকে গ্রেফতার করতে হবে।
খুনি যত শক্তিশালী হোক না কেন তাকে গ্রেফতার করতেই হবে। আজ পর্যন্ত কোনো শিক্ষক সংগঠনকে সাজিদ হত্যার বিচার চাইতে দেখলাম না অথচ বেতন, লোন নিয়ে তারা সরব। খুনিদের ফাঁসির দণ্ডে দণ্ডিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা পিছু হটবো না।’
উল্লেখ্য সাজিদ আব্দুল্লাহ আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত ১৭ জুলাই তাকে ক্যাম্পাসের শাহ আজিজুর রহমান হল সংলগ্ন পুকুরে মৃত ভেসে থাকতে দেখা যায়। ময়নাতদন্তের ভিসেরা রিপোর্ট প্রকাশিত হলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছিল বলে জানানো হয়।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ






