• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

চিকিৎসা সেবায় ভোগান্তি

ফেনী জেনারেল হাসপাতালে রোগীর চাপ

ফেনী প্রতিনিধি    ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:২৪ পি.এম.
ছবি: ভিওডি বাংলা

ফেনীর ১৮ লাখ মানুষের সরকারি স্বাস্থ্যসেবার প্রধান ভরসা জেলা শহরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল। শুধু ফেনী নয়, আশপাশের জেলা কুমিল্লা ও নোয়াখালী থেকেও প্রতিদিন শত শত রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। কিন্তু পর্যাপ্ত জনবল, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও ব্যবস্থাপনার ঘাটতির কারণে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২৫০ শয্যার হাসপাতালটি বর্তমানে মাত্র ১৫০ শয্যার জনবল নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিদিন বহির্বিভাগে গড়ে ৮০০ থেকে ১২০০ জন এবং ওয়ার্ডে ভর্তি থাকেন প্রায় ৬০০ রোগী।

৩০৬টি অনুমোদিত পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ২০৬ জন। সিনিয়র কনসালটেন্ট আছেন ৫ জন, যেখানে থাকা উচিত ৯ জন। জুনিয়র কনসালটেন্টের পদেও রয়েছে শূন্যতা।রয়েছেন ৫৬ জন, থাকার কথা ২৫০ জন।

নার্স রয়েছেন ১৪০ জন, যেখানে প্রয়োজন ২০০ জন। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রয়েছেন ৫৭ জন—তাদের অনেকেই নিয়মিত বেতন না পাওয়ায় কাজে অনিয়মিত।

দীর্ঘদিন ধরে মেডিসিন, শিশু, রেডিওলজি, সার্জারি, দন্ত, চক্ষু ও চর্ম বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। শিশু বিভাগে পরিস্থিতি সবচেয়ে সংকটাপন্ন—শয্যা কম, রোগী বেশি। অনেক শিশুকে করিডোর ও বারান্দায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

রোগীরা অভিযোগ করেছেন, চিকিৎসক ও নার্সের সংখ্যা কম হওয়ায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। নোয়াখালীর সাজেদা বলেন, “হাসপাতাল থেকে ওষুধ পাওয়ার কথা থাকলেও বাইরে থেকে কিনতে হয়। এমনকি রোগীর খাবারও সঠিকভাবে মেলে না।”
আরেক রোগী রহিম উল্লাহ বলেন, “ইমারজেন্সি ডাক্তার দেখাতে গেলে বড় সিরিয়ালে দাঁড়াতে হয়। ডাক্তারদের পক্ষে এত রোগী সামলানো সম্ভব নয়।”

হাসপাতাল সূত্র জানায়, বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। গত সপ্তাহে ভর্তি ছিলেন ১৭ জন, এই সপ্তাহে ভর্তি হয়েছেন ২৩ জন, চিকিৎসাধীন আছেন ৮ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৪৩১ জন রোগী, যেখানে অনুমোদিত বেড সংখ্যা ২৫০।

হাসপাতালের নতুন ছয়তলা ভবনে লিফট বিকল থাকায় রোগী ও স্বজনদের দুর্ভোগ বেড়েছে। একটি লিফট কখনো চালু হয়নি, অন্যটি তিন-চার বছর ধরে অচল। ফলে আইসিইউ, সার্জারি বা শিশু বিভাগে রোগী পরিবহনে হচ্ছে চরম ভোগান্তি।

ডায়রিয়া ওয়ার্ডের কর্মী আলো হাওলাদার বলেন, “রোগীর চাপ এত বেশি যে আমাদের পক্ষে সঠিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া কঠিন।”

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমাদের বরাদ্দ ২৫০ শয্যার জন্য হলেও রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ। সর্দি, কাশি ও শিশুরোগ বেশি দেখা দিচ্ছে। চিকিৎসক ও কর্মী সংকটে আমরা কিছুটা হিমশিম খাচ্ছি। নতুন লিফট ও প্রয়োজনীয় জনবল চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত সমাধান হবে।

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বাঁশখালীতে বিএনপির ৩১ দফার লিফলেট বিতরণে ‘পাপ্পা’
বাঁশখালীতে বিএনপির ৩১ দফার লিফলেট বিতরণে ‘পাপ্পা’
এতিম মরিয়মের দায়িত্বে শিশু ইসমাইল ও সংসার এর বোঝা
এতিম মরিয়মের দায়িত্বে শিশু ইসমাইল ও সংসার এর বোঝা
গণভোটের বিষয়টি এখনও কমিশনের নজরে আসেনি: ইসি
গণভোটের বিষয়টি এখনও কমিশনের নজরে আসেনি: ইসি