ঢাকার যে ৫ আসনে ভোটে লড়বে এনসিপি !

 
                                            
                                    
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য নিজেদের শক্তি-সামর্থ ও সমর্থন সম্পর্কে ধারণাও নিচ্ছে দলটি।
ইতিমধ্যে মাঠপর্যায়ে তৎপরতা বাড়িয়েছে এনসিপি। দলটির সাংগঠনিক সম্পাদকরা ইতোমধ্যে ৪২টি জেলায় প্রতিনিধি সভা ও কর্মী সমাবেশ সম্পন্ন করেছে। অনেক আসনে দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচনি পোস্টারও লাগিয়েছে। নির্বাচনী জোট কিংবা এককভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা হলেও ঢাকায় দলটির কেন্দ্রীয় চার নেতা ভোটে লড়বেন বলেও নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে থাকা তাদের আন্দোলনকালীন সহযোদ্ধা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়াকে ঢাকায় ভোটের মাঠে দেখা যাবে বলেও ইতিবাচক দলটির নেতৃত্ব।
এদিকে নির্বাচন কমিশনের পথনকশা অনুযায়ী ডিসেম্বর মাসে নির্বাচনি তফসিল এবং ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পর কর্মী-সমর্থকসহ বড় দল বিএনপি। তাই শুধু মাত্র ঢাকায় অন্তত ৫টি আসনে এনসিপির নেতারা ভোটে লড়তে চেয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের অবহিত করেছেন এনসিপি। দলটির দায়িত্বশীল সূত্র ভিওডি বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকায় যে সব আসন থেকে ভোটে লড়তে চায় এনসিপি
ঢাকা-৯ তাসনিম জারা (জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব), ঢাকা-১১ নাহিদ ইসলাম (জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক), ঢাকা-১২ হাসনাত আব্দুল্লাহ (জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক), ঢাকা-১৮ নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী (জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক), এবং ঢাকা-১০ আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া, (অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টা)।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দলটি জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদসহ জাতীয় পর্যায়ে চলা সব সংস্কার প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। দলটির নেতাদের ভাষ্য, রাজধানী ঢাকার রাজনীতিতে সাংগঠনিকভাবে অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল বিএনপি। সেই বিবেচনায় ঢাকার বেশকয়েক আসন থেকে ভোটে লড়বেন এনসিপির নেতারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্বাচনে এককভাবে অংশ নিবে নাকি বড় কোনো দলের সঙ্গে জোট বা নির্বাচনি সমঝোতায় যাবে তা ঠিক করতে নিজেদের মধ্যে একাধিক সভা করেছে দলটি। তবে এখনও এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি এনসিপি। নির্বাচনে এনসিপির পলিসি কী হবে? এককভাবে নাকি জোটগতভাবে নির্বাচন করবে, জোট করলে কোন দলের সঙ্গে করবে তা চূড়ান্ত করতে দলটি কাউন্সিল ডেকে নেতাকর্মীদের মতামত নিবে। বেশিরভাগের মতামতের ভিত্তিতেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে দলটি। তবে প্রাথমিক আলোচনায় বিএনপির কাছে দলটির পক্ষ থেকে ঢাকাসহ মনোনয়ন প্রত্যাশী এমন একটি নামের তালিকা পৌছে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নির্বাচনকে সামনে রেখে এনসিপি জোট গঠনের লক্ষ্যে সমমনা একাধিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইতোপূর্বে বৈঠক করেছে। বৈঠকে জোট বা সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচনে যাওয়া নিয়েও আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
দলটির একজন যুগ্ম আহ্বায়ক ভিওডি বাংলাকে বলেন, নির্বাচন নিয়ে এনসিপি বর্তমানে দু’টি চিন্তা মাথায় রাখছে। একটি হচ্ছে- এককভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভোটারদের স্বাধীন ও স্বচ্ছ রাজনীতির বার্তা দেওয়া, অপরটি হচ্ছে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সম্পূর্ণ দলগুলোকে নিয়ে জোট করে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলা। তবে শেষ পর্যন্ত ঠিক কোন দিকে যাবে তা এখনও আলোচনার পর্যায়েই রয়েছে।
এদিকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বিএনপিতে চলছে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ। সংগৃহীত তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্ভাব্য প্রার্থীদের স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছেন, বিভেদ নয় বরং সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে দল মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে হবে।
প্রসঙ্গত, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) থেকে পদত্যাগের গুঞ্জন উঠেছিল যে দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর। তিনি দলের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে পদত্যাগপত্রও জমা দিয়েছেন বলে কয়েকটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এ সংবাদ প্রকাশের পর গত বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত ২টায় এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দফতর) সালেহ উদ্দিন সিফাতের সই এক করা বিজ্ঞপ্তিতে এ সংবাদকে ভিত্তিহীন দাবি করা হয়েছে।
প্রকাশিত গুঞ্জনে আরও বলা হয়, পদসংক্রান্ত জটিলতা থেকে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন পাটওয়ারী। ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে দলে যোগ দিতে পারেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। দলে যোগ দিয়ে তিনি দায়িত্ব নিতে চান নির্বাচন ও দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালকের। তবে, মুখ্য সমন্বয়কের এ পদটিতে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার এ প্রস্তাবে মৌন সম্মতি রয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ নেতৃত্বের। আর এতেই মনঃক্ষুণ্ন হয়ে পদত্যাগ পত্র দিয়েছেন নাসীরুদ্দীন।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচপি/ এমপি
 
                             
                         
                