মাদারীপুরে গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ

মাদারীপুরে যৌতুকের দাবি ও পারিবারিক কলহের জেরে গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।এদিকে ঘটনার পর এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে অভিযুক্তরা।
শনিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে মাদারীপুর শহরের আমিরাবাদ এলাকার (বাদামতলা) মন্ডল বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে ঐদিন রাতেই ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
নিহতের স্বজনরা জানায়, তিন বছর আগে পারিবারিকভাবে শরিয়তপুরের জাজিরা উপজেলার জয়নগর গ্রামের প্রদীপ মণ্ডলের মেয়ে দীপ্তি মণ্ডলের বিয়ে হয় মাদারীপুর শহরের বাদামতলা এলাকার নিতাই মণ্ডলের ছেলে তাপস মণ্ডলের সঙ্গে। বিয়ের সময় স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ দেয়া হলেও যৌতুকের দাবিতে প্রায়ই দীপ্তিকে মারধর করা হতো। এছাড়াও খুঁটিনাটি বিষয় নিয়েও সংসারে চলতো ঝগড়া। এ নিয়ে দীপ্তি পরিবারের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনো সুরহা পায়নি। কয়েকবার বাবার বাড়ি চলে যায় ভুক্তভোগী নারী। পরে সান্ত্বনা দিয়ে আবারও দীপ্তিকে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে আসা হয়। শেষমেষ যৌতুক ও পারিবারিক কলহের জেরে শনিবার দুপুরে গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ স্বজনদের। পরে এটিকে আত্মহত্যা বলেও চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয় বলে জানায় দীপ্তির পরিবার।
খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
নিহত দীপ্তির কাকা গোকুল মণ্ডল বলেন, আমার ভাতিজিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। কোনো অবস্থায় যেন অভিযুক্ত তাপস ও তার পরিবারের লোকজন ছাড় না পায়। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
দীপ্তির বাবা প্রদীপ মণ্ডল বলেন, বিয়ের সময় ৫ ভরি স্বর্ণ ও আসবাবপত্রসহ মূল্যবান জিনিসপত্র দিয়েছি। প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ করে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। আমার একটাই মেয়ে, কিন্তু এভাবে দীপ্তিকে মেরে ফেলবে বুঝতে পারিনি।
তিনি বলেন, ওদের সংসারে দেড় বছরের একটা কন্যা সন্তান রয়েছে। এই মেয়েটার কি হবে? আমিও মামলা করেছি। এই ঘটনার সঙ্গে যারা যারা জড়িত প্রত্যেকের আমি ফাঁসি চাই।
নিহতের আত্মীয় বিনোত মণ্ডল বলেন, ছয় মাস আগেও ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ফার্নিচার বানিয়ে দিয়েছি। দোকানদারের সেই ঋণ এখনও শোধ করা সম্ভব হয়নি। প্রায়ই মেয়েটিকে মারধর করতো তাপস। কিন্তু এভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করবে জানলে মেয়েকে এই জায়গায় বিয়েই দিতাম না। এই ঘটনার বিচার না হলে অন্য অপরাধীরা আগামীতে আরও বড় অঘটন ঘটাতে সাহস পাবে।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আদিল হোসেন জানান, ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়ছি। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি বলেন, মৃত্যুর আগে স্বামী-স্ত্রী দুজনের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ




