• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

আইন উপদেষ্টাকে এনসিপির চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক    ২ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৯ পি.এম.
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল-ছবি সংগৃহীত

নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ২০ অনুচ্ছেদ সংশোধন নিয়ে বিএনপিকে সুবিধা দেয়ার অভিযোগ তুলেছে। সরকারের অবস্থান জানার উদ্দেশ্যে দলটি সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টার কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। 

রোববার (২ নভেম্বর) এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনের সই করা চিঠিটি আইন উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে ২০ অনুচ্ছেদ সংশোধন সংক্রান্ত আলোচনায় বিএনপিকে আপনার দেয়া ব্যক্তিগত আশ্বাস ও অবস্থান নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। একজন উপদেষ্টা হিসেবে রাষ্ট্রের নিরপেক্ষ আইন উপদেষ্টার দায়িত্ব থাকলেও আপনার আচরণ তা প্রতিফলিত করছে না। নির্বাচনী আইন সংশোধনের মতো বিষয়ে কোনো রাজনৈতিক দলের একক সুবিধা দেওয়া সরকারের নিরপেক্ষতার প্রতি আস্থা ক্ষুণ্ণ করতে পারে।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, আইন সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত কোনো একক ব্যক্তির নয়। এটি প্রাতিষ্ঠানিক ও জনস্বার্থমূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্রহণ করা উচিত। যদি কোনো একক ব্যক্তির অবস্থান দিয়ে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে সুবিধা দেওয়া হয়, তবে তা প্রশাসনের প্রতি জন-আস্থাকে দুর্বল করবে এবং সরকারের নিরপেক্ষতার ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।

এনসিপি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ২০ অনুচ্ছেদের বিষয়ে উপদেষ্টার অবস্থান নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ও নির্বাচন কমিশনের বিপরীত বলে মনে করছে। চিঠিতে তিনটি ব্যাখ্যা দিয়ে এই অবস্থানের সমালোচনা করা হয়েছে।

প্রথমত, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন ব্যবস্থার উদ্দেশ্য হলো দলগুলোর অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র, আর্থিক স্বচ্ছতা ও নীতিগত স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। কিন্তু যখন নিবন্ধিত দল অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করে, তখন তারা নিজেদের দায়বদ্ধতা থেকে কার্যত অব্যাহতি পায়। এতে নিবন্ধন প্রক্রিয়ার সার্থকতা নষ্ট হয় এবং নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণমূলক ক্ষমতাও সীমিত হয়।

দ্বিতীয়ত, গণতন্ত্রের মৌলিক নীতি হলো রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা। ভোটার যে দলের প্রতি সমর্থন জানাতে চান, তা স্পষ্ট না হলে ভোটার-দায়বদ্ধতার সম্পর্ক ক্ষুণ্ণ হয়। একাধিক দল বড় দলের প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিলে ভোটার কাকে ভোট দিচ্ছেন, তা বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে।

তৃতীয়ত, এই বিধান কৃত্রিম বহুদলীয়তা সৃষ্টি করে এবং বড় রাজনৈতিক দলগুলিকে সুবিধা দেয়। বড় দলগুলো ছোট ‘প্রক্সি দল’ তৈরি করে তাদের প্রতীকে নির্বাচন করিয়ে আসলেই নিজেদের বক্তব্য পুনরাবৃত্তি করায়। এতে নির্বাচনী বৈচিত্র্য নষ্ট হয় এবং জাতীয় নীতিনির্ধারণে আর্টিফিশিয়াল বহুমতের জন্ম দেয়।

এনসিপি সরকারের প্রতি সুস্পষ্টভাবে অনুরোধ জানিয়েছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ২০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে স্পষ্টভাবে বলা হোক, কোনো নিবন্ধিত দল অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে পারবে না। যৌথ জোটের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দলগুলোকে নতুন নিবন্ধিত রাজনৈতিক সত্তা হিসেবে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন করতে হবে।

দলটির মতে, এই সংশোধন প্রকৃত গণতান্ত্রিক বহুত্ববাদকে শক্তিশালী করবে। প্রতিটি দলকে নিজ নাম, নীতি ও নেতৃত্বের দায়িত্ব নেওয়া নিশ্চিত হবে, যা ভোটারের অধিকার, রাষ্ট্রীয় স্বচ্ছতা ও সাংবিধানিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ।

এনসিপি উল্লিখিত দুটি বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করার অনুরোধ করেছে।

ভিওডি বাংলা/জা

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
খুলনার-২ আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত
খুলনার-২ আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত
বিএনপি জুলাই সনদে স্বাক্ষর করে আবোল-তাবোল বলছে : তাহের
বিএনপি জুলাই সনদে স্বাক্ষর করে আবোল-তাবোল বলছে : তাহের
ইসি ব্যাখ্যা দেয়নি, সংশয় তৈরি হয়েছে : হাসনাত
ইসি ব্যাখ্যা দেয়নি, সংশয় তৈরি হয়েছে : হাসনাত