১৯টি ডায়ালাইসিস মেশিনের মধ্যে ১৭ টি অচল

                                            
                                    
টাকা দিয়ে হাসপাতালের সরকারি ওষুধ নেওয়া, পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য প্রাইভেট ক্লিনিকে পাঠানো, কমিশন বাণিজ্য, হুইলচেয়ার বাণিজ্য ও প্রথমে সাপ্লাই নেই বলে রোগীকে ওষুধ না দেওয়াসহ নানা অনিয়মের চিত্র দেখা গেছে। এসব কারণে সঠিক চিকিৎসা পাওয়া নিয়ে বিপাকে রয়েছেন রোগীরা।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগে কিডনি ডায়ালাইসিসের অধিকাংশ মেশিন নষ্ট হয়ে গেছে। এতে হাসপাতালের ডায়ালাইসিস ইউনিটে জট বেঁধেছে রোগীদের।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডায়ালাইসিস ইউনিটে নেমেছে চরম বিপর্যয়। ১৯টি ডায়ালাইসিস মেশিনের মধ্যে ১৭টিই অকেজো হয়ে পড়েছে। ফলে সপ্তাহে নিয়মিত দুইবার ডায়ালাইসিস করা প্রায় ১৫০ জন কিডনি রোগী এখন বাঁচার লড়াইয়ে অসহায় অবস্থায় রয়েছেন। নিয়মিত ডায়ালাইসিস না পেয়ে এরই মধ্যে কয়েকজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র ও রোগীর স্বজনরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরায় বর্তমানে সরকারি পর্যায়ে ডায়ালাইসিস সুবিধা একমাত্র এই হাসপাতালেই রয়েছে। বেসরকারি ক্লিনিকেও এমন সেবা সীমিত ও ব্যয়বহুল। দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত রোগীদের জন্য এ হাসপাতালই একমাত্র ভরসা।‘আমরা কিডনি রোগী, সপ্তাহে দুইবার ডায়ালাইসিস না করলে শরীর ফুলে যায়, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। সাতক্ষীরা মেডিকেলের ১৯টা মেশিনের মধ্যে এখন মাত্র ২টা চলছে। আমাদের অনেকেই ডায়ালাইসিসের অভাবে মারা যাচ্ছেন। যারা বেঁচে আছে তারাও মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে।
ডায়ালাইসিস মেশিন বিকল হওয়ায় বর্তমানে শতাধিক রোগীকে সপ্তাহে প্রয়োজনীয় দুই সেশন না পেয়ে এক সেশনে সীমাবদ্ধ থাকতে হচ্ছে। কেউ কেউ আবার এক সপ্তাহে একবারও সুযোগ পাচ্ছেন না। ফলে অনেকেই বাধ্য হয়ে খুলনা বা যশোরে গিয়ে ডায়ালাইসিস করাতে বাধ্য হচ্ছেন, যা ব্যয়বহুল ও কষ্টকর।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাশেম আলী নামে এক রোগীর স্ত্রী বলেন, আমার স্বামীকে সপ্তাহে দুইবার ডায়ালাইসিস করতে হয়। এখন হাসপাতালে মেশিন না থাকায় খুলনায় যেতে হচ্ছে। যাওয়া-আসা ও চিকিৎসা খরচ মিলে সপ্তাহে ৬-৭ হাজার টাকা লাগে। আমাদের মতো দরিদ্র পরিবারের পক্ষে এটা সম্ভব না।বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, কিডনি রোগীদের জন্য নিয়মিত ডায়ালাইসিস জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসা। এটি বন্ধ থাকলে শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হলে তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ডায়ালাইসিস ইউনিটের বেশিরভাগ মেশিনই দীর্ঘদিন ব্যবহারের কারণে অকেজো হয়ে পড়েছে। যন্ত্রাংশের অভাব ও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের ঘাটতিতে এমন হয়েছে। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শেখ কুদরত-ই-খুদা বলেন, মেশিনগুলো পুরোনো হয়ে গেছে, কিছু অংশ বিকল। মেরামত ও নতুন মেশিন আনার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সমাধান হবে বলে আশা করছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের অনুরোধ সাংবাদিক সমাজ, প্রশাসন, চিকিৎসক, সমাজের সকল শ্রেণির মানুষ আমাদের পাশে দাঁড়ান। বিষয়টি সরকারের কাছে পৌঁছে দিন। যেন দ্রুত নতুন মেশিন এনে অন্তত আমরা স্বাভাবিকভাবে ডায়ালাইসিস করতে পারি।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ
                            
                        
                
                




                

