• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি

মওলানা ভাসানীকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান করুন : বাংলাদেশ ন্যাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক    ৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:১১ পি.এম.
ছবি: সংগৃহীত

আগামী ১৭ নভেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পালনের উদ্যোগ গ্রহণ ও ১৭ নভেম্বরকে জাতীয় দিবস হিসাবে ঘোষণা করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ। 

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল হমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে জমা দিয়ে আসেন দলের যুগ্ম মহাসচিব মিতা রহমান, প্রচার সম্পাদক গোলাম মোস্তাকিন ভুইয়া, নির্বাহী সদস্য মো. জাহিদুল ইসলাম। 

স্মারকলিপিতে দলের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, মওলানা ভাসানীই স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধীনতার স্বপ্নের বীজ বপন করেছিলেন জনগণের মনের গহীনে। ভাসানী আর স্বাধীন বাংলাদেশ আর বাঙালি চেতনার এক ও অভিন্ন নাম। রাষ্ট্রের সকল অর্জনের কৃতিত্ব কোনো এক ব্যক্তি বা দলের নয়। বৃহৎ রাজনৈতিক দলের সুবিধাভোগী তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য সকল সময়ই ক্ষমতাসীনদের সকল কৃতিত্ব দেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। ফলে বার বার ইতিহাস বিকৃত হচ্ছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা, মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান ভাসানীকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস নির্মিত হবে না।

আরোও বলা হয় যে, ভাসানী জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেশ, মাটি আর মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছেন। একটি শোষনহীন, অসাম্প্রদায়িক, সাম্য আর পালনবাদী সমাজব্যবস্থার জন্য নিজের জীবনের সর্বস্ব ত্যাগ করেছেন। মানব মুক্তির আদর্শ থেকে তিনি একদিনের জন্যও বিচ্যুত হন নাই বা অবসর খোঁজেননি। জীবনের প্রায় প্রতিটি বছর, মাস, সপ্তাহ, দিন তিনি আন্দোলন, সংগ্রাম, কর্মসূচির মধ্যেই থেকেছেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এত দীর্ঘকাল ও ধারাবাহিকভাবে কেউ সক্রিয় আন্দোলন, সংগ্রাম, কর্মসূচির ভেতর থেকেছেন এমন ব্যক্তির সংখ্যা নেই বললেই চলে।

তারা বলেন, বিগত দিনের সকল ক্ষমতাসীনরাই নিজেদের প্রয়োজনে মওলানা ভাসানীকে ব্যাবহার করলেও তাকে তার প্রাপ্য মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করেছেন বার বার। ভাসানীকে তার প্রাপ্য মর্যাদা দিতে ব্যর্থ কাউকেই ইতিহাস ক্ষমা করবে না। বর্তমান সরকারও ভাসানীকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে ব্যর্থ হলে ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাড়াতে হবে। আজীবন সামনের কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, সমগ্র জাতিকে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন চির বিপ্লবী ও বিদ্রোহী মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী। ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন, পাকিস্তানের শোষন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীকার ও স্বাধীনতা আন্দোলন, স্বাধীনতা পরবর্তী গণতান্ত্রিক আন্দোলন, ভারতীয় আধিপত্যবাদী-আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম, প্রবীণ বয়সে ১৯৭৬ সালের ফারাক্কা লংমার্চসহ ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকে তিনি আছেন।

প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে আরও বলা হয় যে, মওলানা ভাসানীসহ দেশের জাতীয় নেতাদের স্মরণ করা, নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব নয় কি? সেই দায়িত্ব কি রাষ্ট্র বা সরকার যথাযথভাবে পালন করছে? কেন মওলানার জন্ম ও মৃত্যুদিন রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হলো না গত ৪৮ বছরেও? মওলানা ভাসানীর প্রতি রাষ্ট্রের এত দৈন্যতা, কৃপণতা, বিদ্বেষ কেন? রাষ্ট্রীয়ভাবে তাকে স্মরণ করার বাধা কোথায়? আজ সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। ২৪’এর গণআন্দোলন আর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সকল বাধা অতিক্রম করে মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পালন করে এবং ১৭ নভেম্বরকে ‘জাতীয় দিবস’ ঘোষণা করে জাতিকে দায়মুক্ত করবেন।

নেতৃদ্বয় বলেন, আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাস সাক্ষী আমরা ভুলে যাই সব কিছু। আমাদের এই বিস্মরণই আমাদের বড় শত্রু। আমরা স্বার্থপর। তাই কি আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসের পতাকাটির চেহারা বিস্মৃত? কে আমাদের রাজনীতিকে গণমানুষের বলে চিহ্নিত করেছিলেন? গণমানুষের অধিকার কায়েমের সংগ্রামে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন কে? সশস্ত্র সংগ্রাম ছাড়া যে দেশের স্বাধীনতা আনা সম্ভব নয়- এই সত্যকে আমাদেরকে শিখিয়েছিলেন? সময়ের দাবি আজ জাতির নবপ্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে মওলানা ভাসানীকে। তার রাজনৈতিক অবদান স্মরণ করে তা জানাতে হবে নবাগত মানুষদের, যারা আমাদের জাতি বিনির্মাণের শক্তি। রাষ্ট্রীয়ভাবে তাকে স্মরণ করার আয়োজন হোক ১৭ নভেম্বর থেকেই, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বেই। তার মত্যু দিনটিকে জাতির রাজনীতিকদের স্মরণীয় দিন হিসেবে ঘোষণা করা হোক।

ভিওডি বাংলা/ এমএইচপি

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
এনসিপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন
এনসিপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন
কামাল মোল্লার প্রার্থিতা স্থগিত করল বিএনপি
কামাল মোল্লার প্রার্থিতা স্থগিত করল বিএনপি
প্রার্থী তালিকায় না থাকা যুবদলের নয়নের প্রতিক্রিয়া
প্রার্থী তালিকায় না থাকা যুবদলের নয়নের প্রতিক্রিয়া