• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

আরপিও চূড়ান্তের আগে রাজনৈতিক সংলাপ প্রয়োজন ছিল : সাইফুল হক

নিজস্ব প্রতিবেদক    ৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৬ পি.এম.
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন সাইফুল হক। সংগৃহীত ছবি

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট আইন—‘প্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)’ চূড়ান্ত করার আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন ছিল।

মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি নির্বাচন কমিশনের কাছে ৩১ দফা সুপারিশও জমা দেন।

সাইফুল হক বলেন, “আরপিও চূড়ান্ত করার আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসা দরকার ছিল। সংলাপ হলে মতবিনিময় হতো, ফলে প্রয়োজনে কিছু সংশোধনও করা যেত। এখন সংলাপ না করায় আরপিও নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “আগামী নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে হলে টাকার প্রভাব বন্ধ করতে হবে। অনেকেই নির্বাচনে বিনিয়োগ হিসেবে টাকা ঢালে। কালো টাকার এই খেলা বন্ধ না হলে নির্বাচন কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না।”

সংসদ নির্বাচনে জামানত ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা এবং নির্বাচনী ব্যয়সীমা ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণের সমালোচনা করে সাইফুল হক বলেন, “এটি দেশের বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। কালো টাকা ও অবৈধ অর্থের প্রভাব বন্ধ না করলে জাতীয় সংসদ ধনী শ্রেণির ক্লাবে পরিণত হবে।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যেসব রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত ও প্রতীকপ্রাপ্ত, তাদের নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করা উচিত। তবে এর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে পর্যাপ্ত প্রস্তুতির সময় দেওয়া প্রয়োজন। আমরা মনে করি, পরবর্তী নির্বাচনে এই বিধান বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে।”

সাইফুল হক আরও বলেন, “নির্বাচনে কালো টাকার প্রভাব, প্রশাসনিক প্রভাব ও ধর্মীয় ব্যবহার বন্ধ না করলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সীমাবদ্ধ থাকবে অল্প কিছু বিত্তশালীর মধ্যে। গণতান্ত্রিক রাজনীতি তখন বিপন্ন হয়ে পড়বে।”

৩১ দফা প্রস্তাবের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি যে ৩১ দফা মতামত ও সুপারিশ নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো—

নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের কার্যকর দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখা, ভোটকেন্দ্রে গোপন কক্ষ বাদে সব স্থানে সিসিটিভি স্থাপন ও বাইরে বড় স্ক্রিনে ফলাফল প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা।

গণমাধ্যমকর্মীদের অবাধ প্রবেশের সুযোগ নিশ্চিত করা, সরকারি চাকরিজীবীদের চাকরি ছাড়ার পাঁচ বছরের মধ্যে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিষিদ্ধ করা এবং মনোনয়ন ফরম বিক্রির মূল্য ৫ হাজার টাকার বেশি না রাখা।

মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ করা, সামাজিক মাধ্যমে অপতথ্য ও এআই কনটেন্টের অপব্যবহার রোধ করা, প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরমের সঙ্গে হলফনামা দাখিল বাধ্যতামূলক করা এবং নির্বাচন শেষে তিন মাসের মধ্যে হলফনামা যাচাইয়ের ব্যবস্থা করা।

দলীয় মনোনয়নে সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশ বহিরাগত প্রার্থী দেওয়ার সীমা নির্ধারণ, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের জনআস্থা হারালে রিকল ব্যবস্থা চালু করা, এবং প্রতি বছর তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশন ও দুদকে জমা দেওয়ার প্রস্তাবও রেখেছে দলটি।

এছাড়া প্রবাসীদের ভোট প্রদানের ব্যবস্থা, দ্বৈত নাগরিকদের প্রার্থীতা ও ভোটাধিকার নিষিদ্ধ করা, কালো টাকার খেলা বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা, ‘না ভোট’ চালু করা, এবং গুরুতর অনিয়মে সম্পূর্ণ আসনের নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের হাতে রাখার দাবি জানানো হয়েছে।

ভিওডি বাংলা/ আরিফ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
এনসিপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন
এনসিপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন
কামাল মোল্লার প্রার্থিতা স্থগিত করল বিএনপি
কামাল মোল্লার প্রার্থিতা স্থগিত করল বিএনপি
প্রার্থী তালিকায় না থাকা যুবদলের নয়নের প্রতিক্রিয়া
প্রার্থী তালিকায় না থাকা যুবদলের নয়নের প্রতিক্রিয়া