মাদারীপুর-১ আসন
আমি ছাড়া নমিনেশন পেলে বিএনপি সিট পাবে না: কামাল

মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন থেকে নাম স্থগিত হওয়ার পর কামাল জামান মোল্লা বলেছেন, এখানে এমপি বানাতে হলে আমাকে নমিনেশন দিতে হবে। আমার বাইরে নমিনেশন নাই, কারো লোকজন নাই। জনসমর্থন আমার সাথে আছে, আমি কাজ করছি, দল আমাকে নমিনেশন দেয়েছে, দেবে। আমার কনফিডেন্স আছে, যদি আমার বাইরে কাউকে দেয় তাহলে এই সিটও পাবে না, আর সেই ক্ষমতাও কারো নাই।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন থেকে নাম স্থগিত হওয়ার পর কামাল জামান মোল্লা দেশের একটি গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন।
কামাল জামান মোল্লা শিবচর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। মাদারীপুর-১ আসনে প্রার্থী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করার পর শিবচর উপজেলার পাচ্চরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ ও গাড়ি ভাঙচুর করে মনোনয়ন না পাওয়া সাজ্জাদ হোসেন লাভলু সিদ্দিকীর সমর্থকরা। এরই সূত্র ধরে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকালে কামাল জামান মোল্লার নাম মনোনয়ন থেকে স্থগিত ঘোষণা করে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল (৩ নভেম্বর) গুলশানস্থ বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ সম্মেলনে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেন। সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭টি সংসদীয় আসনের মধ্যে মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসনেও মনোনয়নপ্রাপ্ত কামাল জামান মোল্লার নাম ঘোষণা করা হয়।
কামাল জামান মোল্লা বলেন, উনি (সাজ্জাদ হোসেন লাভলু সিদ্দিকী) ১০০ থেকে ১২০ জন নিয়ে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন। আমি যদি প্রতিহত করতে যাইতাম আমার ওই এলাকারই ৫ হাজার লোক যাইতো। কিন্তু আমি সবাইকে নিষেধ করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলেছি। তারাই ৩০ মিনিটের মধ্যে সব ঠিক করে দিয়েছেন। এছাড়া নমিনেশন অনেকেই চায় কিন্তু অনেকে পায় আবার অনেকে পায় না, এ ঘটনা আগেও অনেক ঘটেছে। তবে আমরা প্রতিহত করতে যাওয়ার প্রয়োজন মনে করি নাই, তাই যাইও নাই।
তিনি বলেন, মনোনয়ন স্থগিত করছে কিনা তা আমি এখনো জানি না, তবে শুনেছি। এ জন্য বিষয়টি জানার জন্য ঢাকায় যাচ্ছি। তবে স্থগিত হওয়ার কোনো সুযোগ নাই।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর-১ আসনের প্রার্থী কামাল জামান মোল্লা ২০০১ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। বর্তমানে তিনি শিবচর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। রাজনৈতিকভাবে তার পরিবারও বেশ প্রভাবশালী। তার ভাই লতিফ মোল্লা শিবচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। অপরদিকে তার দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী সাজ্জাদ হোসেন লাভলু সিদ্দিকী মাদারীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও ২০১৮ সালে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ছিলেন।
উল্লেখ্য, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সোমবার (৩ নভেম্বর) বিএনপির পক্ষ থেকে মাদারীপুরের দুটি আসনের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে মাদারীপুর-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে কামাল জামান মোল্লা এবং মাদারীপুর-৩ (কালকিনি, ডাসার ও সদরের একাংশ) আসনে আনিসুর রহমান খোকন তালুকদারের নাম ঘোষণা করা হয়। তবে মাদারীপুর-১ আসনে কামাল জামান মোল্লার নাম ঘোষণার পরপরই অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী সাজ্জাদ হোসেন লাভলু সিদ্দিকীর সমর্থকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।
একপর্যায়ে লাভলু সিদ্দিকীর সমর্থকরা সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধরা কয়েকটি যানবাহনে ভাঙচুর চালান এবং ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে যান চলাচলে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয় এবং সাধারণ যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় সেনাবাহিনী ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে মাদারীপুর-২ (রাজৈর ও সদর উপজেলা) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রার্থী হিসেবে এখনো কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি।
ভিওডি বাংলা/ এমএম







