• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

রাজৈরে প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যার অভিযোগ

রাজৈর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি    ৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৪ পি.এম.
ছবি-ভিওডি বাংলা

মাদারীপুরে রাজৈর উপজেলায় শ্বশুর বাড়ির লোকজনের মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সুমাইয়া আক্তার (১৮) নামে এক ইতালি প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের দাবি, শ্বশুরবাড়ির মানসিক নির্যাতনের কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর অভিযুক্ত শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা পলাতক রয়েছে।

বুধবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের মরদেহ তার বাবার বাড়ি রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়নের কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামে দাফন করা হয়। নিহত সুমাইয়া ওই গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নাসির হাওলাদারের মেয়ে।

এর আগে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) মধ্যরাত ২টার দিকে কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামে সুমাইয়ার বাবার বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, মাত্র ১৬ মাস আগে মাদারীপুর সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের ভরিয়াপাড়া গ্রামের সরোয়ার হাওলাদারের ছেলে ইতালি প্রবাসী জহিরুল হাওলাদারের সাথে সুমাইয়া আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্ত্রীকে ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে জহিরুল। পরে সুমাইয়াকে ইতালি নিতে বাধা দেয় জহিরুলের পরিবার। 

এ নিয়ে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে বিয়ের সময় দেওয়া সুমাইয়ার ১০ ভরি স্বর্ণালংকার আত্মসাৎ করে এবং মানসিক নির্যাতন শুরু করে শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদ, অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের। 

এজন্য বেশ কিছুদিন ধরে বাবার বাড়িতে বসবাস করে আসছিল সুমাইয়া। মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে স্বামীর সাথে মোবাইল ফোনে ঝগড়া হলে নিয়মিত মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ফ্যানের সাথে ওড়না পেচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।

সুমাইয়ার মা রুমি বেগম জানান, ঝগড়ার পর রাত দেড়টার দিকে ইতালি থেকে জহিরুল আমাকে ফোন দিয়ে বলে আপনার মেয়ে ৩ ঘণ্টা ধরে ফোন ধরছে না। এ কথা শুনেই সুমাইয়ার রুমে গিয়ে দেখি আমার মেয়ে আর দুনিয়াতে নেই। বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে তার শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদ মিলে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে আসছিল। এজন্য আমার মেয়ে তার শ্বশুর বাড়িতে থাকতে পারে নাই। ওরা আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। 

সুমাইয়ার বাবা নাসির হাওলাদার অভিযোগ করে জানান, আমার মেয়েকে বিয়ের পর ইতালি নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জহিরুল তার পরিবারের বাধায় নেয় নাই। আমরা গরিব বলে আমার মেয়েকে সব সময় মানসিক নির্যাতন করতো তারা। শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মরে গেছে। আমার মেয়ে মরার পর কেউ দেখতেও আসে নাই। আমি চাই এমন নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা আর যেন কারও সন্তানের সাথে না ঘটে।

স্থানীয় আলামিন হাওলাদার জানান, বিদেশ যাওয়া ও স্বর্ণালংকার নিয়ে সুমাইয়া ও তার শ্বশুর বাড়ির মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এরপর প্রায় দুই মাস আগে আমরা তার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে সবার সাথে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেছিলাম। সুমাইয়া বলেছিল, হয় আমাকে ছাড়াই নেও নাহলে আমি গলায় দড়ি দেব। আজ সেই কাজটাই করলো। আমরা এর বিচার চাই।

রাজৈর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খান জানান, মরদেহটি ময়নাতদন্ত শেষে মাদারীপুর সদর হাসপাতাল থেকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভিওডি বাংলা-মহিবুল আহসান লিমন/জা

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
টিকাদান লক্ষ্য অর্জনে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে: বিভাগীয় কমিশনার
টিকাদান লক্ষ্য অর্জনে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে: বিভাগীয় কমিশনার
কামারখন্দে রোহিঙ্গাকে নাগরিক সনদ দেওয়ায় চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত
কামারখন্দে রোহিঙ্গাকে নাগরিক সনদ দেওয়ায় চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত
ভূমিদস্যুর দ্রুত বিচার দাবি
ভূমিদস্যুর দ্রুত বিচার দাবি