গণতন্ত্রের বাতিঘর তারেক রহমান: আমীর খসরু

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে গণতন্ত্রের বাতিঘর হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর বনানীর শেরাটন হোটেলে ফোরাম ইনিশিয়েটিভ (ডিএফআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ পুনর্কল্পনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
বৈঠকটি মূলত জয়নুল আবেদীন রচিত ‘তারেক রহমান: পলিসি অ্যান্ড পলিটিক্স’ গ্রন্থ এবং বিবিসিকে দেওয়া তারেক রহমানের বিশেষ সাক্ষাৎকার বিশ্লেষণকে কেন্দ্র করে আয়োজন করা হয়।
আমীর খসরু বলেন, ‘বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রথম প্রবর্তক জিয়াউর রহমান। এরপর গণতন্ত্রের জন্য শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ লড়াই করেছেন খালেদা জিয়া। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে কোনো আপস না করার কারণে তিনি আপসহীন নেত্রী হয়েছেন। তার পরে তারেক রহমান এই গণতন্ত্র রক্ষা করার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে বাংলাদেশে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের মধ্যে তারেক রহমান গণতন্ত্রের বাতিঘর। খালেদা জিয়া যেমন কম্প্রোমাইজ করেননি, তারেক রহমানও কোনো রকম কম্প্রোমাইজ না করে গণতন্ত্রের সংগ্রাম চালানোয় স্বৈরাচারকে বিতাড়িত করা হয়েছে।’
সত্যিকার গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সেসব তারেক রহমান নিচ্ছেন উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ‘যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, যারা সংস্কারের কথা এখন বলছেন, সবার জানা উচিত- খালেদা জিয়া ২০১৬ সালে তা ভিশন টোয়েন্টি থার্টির মধ্যে দিয়েছেন। হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশে কী করতে হবে, সেটাকে মাথায় রেখে দিয়েছেন। পরে বিএনপির পক্ষ থেকে তারেক রহমান ২৭ দফা সংস্কার প্রস্তাবে পেশ করেছেন। এতেও হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশ কোথায় যাবে, সবকিছু ইনক্লুড আছে। এরপর আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে যারা এসেছেন, তাদের কিছু চিন্তা-ভাবনা ইনকরপোরেট করে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব আমরা এনেছি।’
যখন অন্য কোনো দল সংস্কারের দাবি জানাতে সাহস পায়নি, তখন বিএনপি ৩১ দফা প্রকাশ করেছে। তা দলের দৃষ্টিভঙ্গি এবং দেশের জন্য তাদের অঙ্গীকারের প্রতিফলন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি এমন এক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়তে চায় যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ থাকবে এবং সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে। বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে দেশকে স্বনির্ভর করার প্রতিশ্রুতি আমাদের।’
তারেক রহমানের ভাবনা অনুযায়ী বিদেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নির্ভর করবে চারটি শর্তের ওপর উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ‘বিদেশের সঙ্গে আমাদের কূটনীতি নির্ভর করবে পারস্পরিক সম্মানবোধ, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়, ভূরাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ এখতিয়ার থাকা এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ না করার ওপর।’
১৮ মাসে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের কথা বললে অনেকেই বিএনপিকে উচ্চাকাঙ্ক্ষী দল হিসেবে উল্লেখ করে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘অবশ্যই বিএনপি উচ্চাকাঙ্ক্ষী দল, তারেক রহমানও উচ্চাকাঙ্ক্ষী। কারণ দেশ উন্নয়নের জন্য এ ছাড়া বিকল্প নেই। এজন্য আমরা এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।’
আমীর খসরু বলেন, ক্ষমতায় এলে প্রথম দিন থেকেই কার্যক্রম শুরু করবে দল এবং পেপাল উন্মুক্ত করার প্রস্তাবও রয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। সঞ্চালনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম কামরুল আহসান। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী।
ভিওডি বাংলা/ এমএম



