সংবিধান সংশোধন বা পরিবর্তনের একমাত্র স্থান হলো সংসদ: আমীর খসরু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সংবিধান সংশোধন বা পরিবর্তনের একমাত্র স্থান হলো সংসদ। সংসদে প্রস্তাব পাস না করে সংবিধানে কোনো পরিবর্তন আনার সুযোগ নেই। বর্তমান সরকার এই সংবিধান মেনেই শপথ নিয়েছে তাই সমাধানও সংবিধানের মধ্যেই খুঁজতে হবে, এর বাইরে নয়।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে গণফোরামের উদ্যোগে “বাংলাদেশের সংবিধান ও সংস্কার প্রস্তাব” শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
আমীর খসরু বলেন, “সংবিধান গঠন বা সংশোধনের বিষয়টি মূলত সংসদের। সংসদের বাইরে আলোচনা বা মতামত দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু কোনো পরিবর্তন আনতে হলে তা সংসদের মাধ্যমেই করতে হবে। সংসদে প্রস্তাব, পাস না করে সংবিধান পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই।”
বর্তমান সরকার সংবিধান অনুযায়ী শপথ নিয়েছে। অর্থাৎ বর্তমান সংবিধানই কার্যকর ও বলবৎ। “তাহলে সমাধানও এই সংবিধানের মধ্যেই খুঁজতে হবে। এর বাইরে গিয়ে কোনো পরিবর্তন বা সংশোধনের কারো অধিকার নেই,” যোগ করেন খসরু।
গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বর্তমান সংবিধানে গণভোটের কোনো বিধান নেই। কেউ গণভোট করতে চাইলে আগে সংবিধান সংশোধন করে তা যুক্ত করতে হবে— আর সে কাজ করতে হয় সংসদে। জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া এটি সম্ভব নয়।”
বিএনপি গণভোটের প্রস্তাব দিলেও সেটি সাংবিধানিক বা নৈতিকভাবে সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। “রাজনৈতিক সহনশীলতা থেকে বিএনপি প্রস্তাবটি দিলেও এটি ভুল ছিল, কারণ এতে জটিলতা বেড়েছে।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “এখন কেন এত তাড়াহুড়ো করে গণভোটের কথা তোলা হচ্ছে? আইন ভঙ্গ করে, সংবিধানের বাইরে গিয়ে, গণতন্ত্রকে পাশ কাটিয়ে এর পেছনে উদ্দেশ্য কী?”
আমীর খসরু বলেন, “যারা ঐক্যমত কমিশনের নামে নতুন দাবি তুলছে, তারা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয়, জনগণের মালিকানায় বিশ্বাস করে না।”
বিএনপি নেতা বলেন, “আমাদের উচিত ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। গণতন্ত্র মানে নিয়মিত নির্বাচন— এর বাইরের কোনো প্রক্রিয়া গণতন্ত্র নয়।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “ঢাকায় বসে যারা নিজেদের পছন্দমতো বাংলাদেশ বানাতে চায়, তাদের সঙ্গে শেখ হাসিনার শাসনের কোনো পার্থক্য নেই।”
আমির খসরু সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমরা দুই বছর আগে শেখ হাসিনার সময়েই ৩১ দফা সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। আজ যারা সংস্কারের কথা বলছে, আমরা তাদের আগে বলেছি এবং জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে তা বাস্তবায়ন করব।”
তিনি আরও বলেন, “ঐক্যমত কমিশনের মূল উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক ঐক্য সৃষ্টি করা, কোনো গোষ্ঠীর মত চাপিয়ে দেওয়া নয়। কিন্তু এখন ঐকমত্য না থাকলেও নতুন প্রস্তাব আনা হচ্ছে এটি জনগণের সঙ্গে প্রতারণা।”
সভায় গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথি ছিলেন গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমসহ অনেকে।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ



