৭ নভেম্বরের বিপ্লবের মাধ্যমে জাতির মুক্তি এসেছিল : রিজভী

১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরই জাতি প্রকৃত মুক্তি অর্জন করেছিল মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশকে বারবার গিলে খাওয়ার ষড়যন্ত্র হয়েছে। শেখ হাসিনার সরকার সেই শক্তিরই অনুগত প্রতিনিধি ছিল, যারা ইতিহাস বিকৃত করে জাতির স্বকীয়তা ও কৃষ্টি ধ্বংস করতে চেয়েছিল। কিন্তু ৭ নভেম্বরের চেতনা সেই অন্ধকার দূর করে দিয়েছে। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরই জাতি প্রকৃত মুক্তি অর্জন করে।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সিপাহী–জনতার ঐক্যবদ্ধ বিপ্লবের স্মৃতিকে ধারণ করে এই প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজকের এই আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুধু একটি প্রদর্শনী নয়, এটি ইতিহাসের প্রদর্শনী। এই ছবিগুলো প্রমাণ করে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রকৃত মুক্তির দিন। ১৯৭১ সালে আমরা বিজয় অর্জন করেছিলাম, কিন্তু তখন প্রকৃত মুক্তি আসেনি। জাতির মুক্তি এসেছিল ৭ নভেম্বরের বিপ্লবের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, ১৫ আগস্টের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিলেন, তারা শেখ মুজিব সরকারেরই অংশ ছিলেন, শুধু নাম ও পদবির পরিবর্তন হয়েছিল। এই অবস্থায় জাতির মধ্যে ভয়, আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়েছিল। ঠিক তখনই সিপাহী–জনতার ঐক্যবদ্ধ বিপ্লব ৭ নভেম্বর সেই অন্ধকার ভেদ করে জাতিকে মুক্তির পথ দেখায়। জনগণ তখন তাদের মুক্তির দিশারী হিসেবে পেয়েছিল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে।
রিজভী আরও বলেন, জিয়াউর রহমানই প্রথম জাতিকে একটি নতুন আদর্শ দেন - 'বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’। এই আদর্শে নিহিত ছিল আমাদের ভূমি, মাটি, মানুষ, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও স্বকীয়তার প্রতিচ্ছবি। তিনি আমাদের জাতিসত্তাকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মর্যাদার সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু জাতির দিশারীই ছিলেন না, তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করে রাজনীতিতে মুক্তচিন্তা ও বহুমতের ধারাকে পুনরুজ্জীবিত করেন। আজকের এই প্রদর্শনী সেই ইতিহাসেরই জীবন্ত সাক্ষ্য।
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণআন্দোলনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তাদের ত্যাগ ও নেতৃত্বের মাধ্যমে আরেকটি মুক্তির ইতিহাস রচনা করেছে। এই ছাত্রসমাজই প্রমাণ করেছে, ৭ নভেম্বরের চেতনা আজও বেঁচে আছে।
অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, যেভাবে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর জাতি বিভক্ত অবস্থা থেকে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, তেমনই ২০২৪ সালেও আমরা আরেকটি গণঅভ্যুত্থানের সাক্ষী হয়েছি। কিন্তু আজও আমাদের সামনে সেই জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, যেভাবে ৭ নভেম্বরের বিপ্লবের পর বাংলাদেশ একটি স্বর্ণযুগে প্রবেশ করেছিল, তেমনই আসন্ন নির্বাচনের পরও আমরা দেশের নতুন স্বর্ণযুগের অপেক্ষায় আছি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির, ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন প্রমুখ।
ভিওডি বাংলা/ এমএম





