• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

নির্বাচন বিলম্বিত করে ক্ষমতার স্বাদ নিতে চায় কিছু দল: হাফিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক    ৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৪ পি.এম.
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। ছবি: ভিওডি বাংলা

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম অভিযোগ করেছেন, কিছু রাজনৈতিক দল সরাসরি নির্বাচনে জয়ের সম্ভাবনা না থাকায় নির্বাচন বিলম্বিত করে ক্ষমতার স্বাদ নিতে চাইছে। তিনি বলেন, এসব দল প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্যাংকগুলোতে নিজেদের লোক বসিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সুযোগ ভোগ করছে, যা গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার বিরোধী।

শনিবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর তোপখানা রোডে বিএমএ ভবনের অডিটোরিয়ামে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)-এর উদ্যোগে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে “জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস এবং বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট” শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জনগণ ভারতীয় আধিপত্যবাদ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিল। একইভাবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশের সাধারণ মানুষ, ছাত্র সমাজ, রাজনৈতিক কর্মী ও ব্যবসায়ীরা আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়েছে। দুটি ঘটনাই আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জনগণের সংগ্রামের বিজয়।”

তিনি বলেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদস্যদের মধ্যে অনেকেই ৫ আগস্টের আন্দোলনে কোনো ভূমিকা রাখেননি। যোগাযোগের কারণে তারা সরকারে এসেছেন। প্রথম দিকে তাদের ধারণা ছিল শেখ হাসিনার সরকারের বাকি মেয়াদ পূর্ণ করা উচিত।”

বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, “এই সরকার এখন নিজেদের স্বার্থ নিয়েই ব্যস্ত। জনগণের মুক্তি বা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো রূপরেখা তারা দেয়নি। বরং নানা বিলাসে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এয়ার কন্ডিশন গাড়ি, বিদ্যুৎ বিল ছাড়া সুযোগ-সুবিধা পেয়ে তারা এখন আর জনগণের কথা ভাবছেন না।”

তিনি আরও বলেন, “জনগণের স্বাধীন ভোটাধিকারের পরিবর্তে কিছু দল নতুন ফর্মুলা দিতে চাইছে। প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পি.আর.) পদ্ধতি বা গণভোটের কথা বলা হচ্ছে— যা জনগণ বোঝে না এবং এতে তাদের স্বাধীন ভোটাধিকার খর্ব হবে।”

হাফিজ উদ্দিন বলেন, “গণভোটের কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি নেই। জনগণকে বলা হচ্ছে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বলো— এতে তাদের স্বাধীন মতপ্রকাশের সুযোগ সীমিত হয়। বিএনপি, জুলাই সমাজসহ আমরা সবাই একটি সনদে স্বাক্ষর করেছি যে, নির্বাচনের পর সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে আমরা সেই সনদ বাস্তবায়ন করব। তাহলে আবার গণভোটের প্রয়োজন কোথায়?”

তিনি মনে করেন, সব রাজনৈতিক দল একসঙ্গে বসে ২৮ দফা বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছে একটি ‘জুলাই সনদ’ তৈরি করলে সেটিই ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের যৌক্তিক পরিণতি হতো।

অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “যারা এখন সংস্কার প্রস্তাব দিচ্ছেন, তাদের অনেকে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত। তাদের জনগণের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। এভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা গণতন্ত্রের পরিপন্থী।”

আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, “আমরা চাই একটি সঠিক, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। জনগণ যদি বাধাহীনভাবে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারে, ইনশাআল্লাহ  গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন ড্যাব সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ।

আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এড. সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, এবং বিএনপির সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. পারভেজ আলম কাকনসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।


ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
আন্দোলনরত ৮ দলের লিয়াজো কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত
আন্দোলনরত ৮ দলের লিয়াজো কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত
গণভোট নিয়ে আলোচনায় বিএনপির না: হামিদুর
গণভোট নিয়ে আলোচনায় বিএনপির না: হামিদুর
১০ বছরের মধ্যে এনসিপি ক্ষমতায় যাবে: হান্নান মাসউদ
১০ বছরের মধ্যে এনসিপি ক্ষমতায় যাবে: হান্নান মাসউদ