রাজবাড়ীতে রাতের আঁধারে কেটে ফেলা হলো কৃষকের ৫০০ কলাগাছ

রাজবাড়ীতে রাতের আঁধারে এক অন্ধ কৃষকসহ তিন ভাইয়ের প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ কলাগাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্তরা হলেন, সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের কোলারহাট এলাকার গাবলা মোজা গ্রামের মানিক গাজি, ইয়াসিন মুন্সি, তপু গাজি ও অজ্ঞাত আরও কয়েকজন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা হলেন, একই এলাকার কাদের মিজি, অন্ধ হাসেম মিজি ও মোতালেব মিজি।
শনিবার (৮ নভেম্বর) দিনগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক কাদের মিজি বলেন, “গাবলা মৌজায় আমার বাবার নামে ৪২ শতাংশ জমি দলিলকৃত। বহু বছর ধরে আমরা জমিটি ভোগদখল করে আসছি। কিন্তু ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর মানিক গাজি জোরপূর্বক ২০ শতাংশ জায়গা দখল করে বেড়া দিয়ে দেয়। অবশিষ্ট ২২ শতাংশ জমিতে আমরা তিন ভাই মিলে কলাবাগান করেছিলাম। জমিটি নিয়ে আমরা আদালতে মামলা করেছি। এরপর থেকেই তারা হুমকি দিতে থাকে। শনিবার রাতে তারা আমাদের বাগানে ঢুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে প্রায় ৫–৬ শতাধিক কলাগাছ কেটে ফেলে। প্রতিটি গাছে কলাধরা ছিল। এতে আমাদের দুই লাখ টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে। আমরা এখন নিঃস্ব।”
জমির আরেক মালিক, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হাসেম মিজি বলেন, “এই জমির আয় দিয়েই আমাদের সংসার চলে। অথচ জমি দখল না পেরে ওরা সব কলাগাছ কেটে ফেলেছে। সরকারের কাছে আমরা ন্যায়বিচার চাই।”
অন্য মালিক মোতালেব মিজি বলেন, “এটি আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি, যা শুরু থেকেই আমাদের ভোগদখলে। কিন্তু ৫ আগস্টের পর থেকে মানিক গাজি ও তার সহযোগীরা বিএনপির দাপট দেখিয়ে জমিটি দখলের চেষ্টা করছে। ব্যর্থ হয়ে এখন তারা রাতের আঁধারে আমাদের কলাগাছগুলো কেটে ফেলেছে। এতে আমরা প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছি।”
প্রত্যক্ষদর্শী কাদের মিজির স্ত্রী লুৎফুন্নেছা বলেন, “রাতে আমরা বাধা দিতে গেলে তারা হুমকি দিয়ে বলে, ‘আমাদের দল এখন ক্ষমতায়, বেশি বাড়াবাড়ি করলে ফল ভালো হবে না।’ সব কলাগাছ কেটে আমাদের সর্বনাশ করেছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা রহিমা, আফরোজা, খালেক ও আব্দুল্লাহ জানান, জমির মালিকানা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পূর্ব থেকেই বিরোধ চলে আসছে। ওই বিরোধের জেরেই মূলত এই কলাগাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে।
অভিযুক্ত মানিক গাজি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “ওই জমিটি ৪০ বছর আগে কাদের মিজির বাবার কাছ থেকে আমরা কিনে নিয়েছিলাম। আওয়ামী লীগের আমলে তারা প্রভাব খাটিয়ে আমাদের জমি দখল নেয়। সরকার পরিবর্তনের পর আমরা জমিটি দখলে নিয়ে কলাগাছ লাগিয়েছি। এখন সেখানে অন্য ফসলের চাষ করবো বলে কলাগাছ গুলো কেটে ফেলেছি। তারা যে অভিযোগ দিয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন, আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেও করার অপচেষ্টা মাত্র।” এ কথা বলেই পরে কথা বলবেন জানিয়ে তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, “এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ







