কিশোরগঞ্জ-২ আসনে প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের দাবি

কিশোরগঞ্জ-২ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়া অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিনকে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুখ্যাত সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি আব্দুল কাহার আকন্দের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও ‘ফ্যাসিস্টের পদলেহনকারী’ উল্লেখ করে তার মনোনয়ন বাতিল এবং সকল দলীয় পদ থেকে অব্যাহতির দাবি জানিয়েছেন আমার দিন সম্পাদক আহসান হাবিব (বরুন)।
সোমবার (১০ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তিনি।
আহসান হাবিব বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১ দফার ভিত্তিতে একটি আধুনিক, নিরাপদ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন দেখছেন, সেখানে এমন বিতর্কিত ব্যক্তির উপস্থিতি সেই স্বপ্নের জন্য হুমকি স্বরূপ।
তিনি বলেন, অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন কিশোরগঞ্জে ফ্যাসিস্ট সরকারের ঘনিষ্ঠ কাহার আকন্দকে প্রতিষ্ঠিত করতে নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে বারবার প্রধান অতিথি হিসেবে এনেছেন এবং একুশে আগস্ট হামলা মামলার সম্পূরক চার্জশিটকে প্রশংসা করেছেন। এ ছাড়া কাহার আকন্দ, সোহরাব হোসেন, নূর মোহাম্মদ, মুখলেসুর রহমান বাদল, রফিকুল ইসলাম রেনু ও ফেরদৌস উকিলসহ আওয়ামী ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের সঙ্গে জালালের সম্পর্ক রয়েছে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর জালাল উদ্দিন চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও মামলাবাজিতে জড়িত হন। পাকুন্দিয়া উপজেলার তিনটি বালু মহাল দখল করে তিনি লুটপাটের মাধ্যমে কোটি টাকার বালু বিক্রি করেছেন। টেন্ডার সমঝোতার নামে দুই কোটি ৯২ লাখ টাকা সংগ্রহ করে তার মধ্যে এক কোটি ১৪ লাখ টাকা দলীয় নাম ব্যবহার করে আত্মসাৎ করেন বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।
তিনি জানান, জালাল উদ্দিন বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে মামলা ও হামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায় করেছেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করেছেন এবং মনোনয়ন পাওয়ার পর এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছেন। ছাত্রদল নেতাদের হুমকি, প্রবাসী কর্মীদের ভয় দেখানো, এমনকি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করাতে তার ভূমিকা ছিল।
আহসান হাবিব বলেন, সম্প্রতি তারেক রহমানের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ‘খন্দকার শামসুল আলম ফাউন্ডেশন মেধাবৃত্তি পরীক্ষা’ সফল না হওয়ার জন্যও জালাল উদ্দিন সক্রিয় ছিলেন। যে ব্যক্তি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের জনসম্পৃক্ততামূলক অনুষ্ঠানে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন, তিনি তারেক রহমানের জীবন ও আদর্শের জন্য হুমকি।
জালাল উদ্দিন অতীতে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে মেয়র নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং বর্তমানে জেলা বিএনপি সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। এমন প্রার্থী থাকলে কিশোরগঞ্জ-২ আসনের নির্বাচনে দলের জন্য নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
আহসান হাবিব বিএনপি নেতৃত্বের কাছে জালাল উদ্দিনের মনোনয়ন বাতিল ও দলীয় পদ থেকে অব্যাহতির দাবি জানান। একইসঙ্গে নিজেকে মনোনয়ন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, ২০০১ সালে হাত ছাড়া হওয়া আসনটি বিপুল বিজয়ে পুনরুদ্ধার করে তারেক রহমানকে উপহার দেব। চাঁদাবাজ-দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। মানুষের ভালোবাসায় থাকুন, মানুষের জন্য কাজ করুন। দিল্লি নয়, পিন্ডি নয়—সবার আগে বাংলাদেশ।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ






