আজ ১১ই নভেম্বর ঐতিহাসিক নওগাঁ দিবস

আজ ঐতিহাসিক নওগাঁ দিবস। ১৯৭১ সালের ১১ই নভেম্বর এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের এক রক্তক্ষয়ী সম্মুখ যুদ্ধ সংগঠিত হয়। ১২ ঘন্টা ধরে চলা এই যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনী শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। এটি ছিল পুরো তাড়াশ উপজেলাকে হানাদারমুক্ত করার পথে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিজয়। পলাশডাঙ্গা যুবশিবিরের এ যুদ্ধ স্মরণে প্রতিবছর " নওগাঁ দিবস" হিসেবে পালন করা হয়। এই দিবসটি প্রতি বছর মুক্তিযোদ্ধা এবং সাধারণ মানুষ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করেন। পরিণত হয় মুক্তিযোদ্ধা- জনতার মিলন মেলায়। তবে রাষ্ট্রীয় অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে গত বছরের ন্যায় এ বছরও কোনো কর্মসূচি নেই মর্মে তাড়াশ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা গাজী আব্দুর রহমান মিঞা নিশ্চিত করেছেন।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে জানা যায়, সিরাজগঞ্জে সে সময়ের ছাত্র নেতা আব্দুল লতিফ মির্জার নেতৃত্বে গঠিত হয় " পলাশডাঙা যুবশিবির"। এ যুব শিবির মূলতঃ এফএফ, বিএলএফ-বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সেস, বেঙ্গল রেজিমেন্ট, বিডিআর, পুলিশ, আনসার, ছাত্র-জনতার সম্মিলিত একটি গেরিলা বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হয়।
পলাশ ডাঙা যুব শিবিরের গেরিলারা নৌ ও স্থল পথে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী থেকে শুরু করে বগুড়া, সিরাজ গঞ্জ ও পাবনা জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাক হানাদার বাহিনী পরাজিত করে মুক্তাঞ্চল গড়ে তোলেন।
১৯৭১ সালের ১০ নভেম্বর সিরাজগঞ্জের নওগাঁয় নৌপথে অস্থান করছিলেন পলাশডাঙা যুবশিবিরের গেরিলারা।
খবর পেয়ে ১১ নভেম্বর পাক বাহিনীর ২০৫ ব্রিগেডের ৩২ বেলুচ রেজিমেন্ট নওগাঁ আক্রমণ করে। মুক্তিবাহিনীও পাল্টা জবাব দেয়। প্রায় ১২ ঘণ্টার এক ঘোরতর সম্মুখ যুদ্ধে রসদহীন হয়ে পড়ায় পাকসেনারা পরাজয় বরণ করে। এ যুদ্ধে ১৫৩ জন পাকসেনা ও ৬৯ রাজাকার নিহত হয়। বেলুচ রেজিমেন্টের কমান্ডার ক্যাপ্টেন সেলিম সহ ৮ পাকসেনা মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। নওগাঁ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা কেউ আহত বা নিহত হোননি।
এ যুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে বাংলাদেশ সরকার নওগাঁ জিন্দানী ডিগ্রি কলেজ চত্বরে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আরশেদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের সিভিলিয়ান আর্মি লিডারের নেতৃত্বে গঠিত পলাশডাঙা যুবশিবিরের রণকৌশল নিয়ে একাধিক গবেষণা হলেও, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না মেলায়, এ আপসোস বুকে নিয়ে অনেক সদস্য এখনো বেঁচে আছেন।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ







