“কারাগারে মেয়ের ব্যাগ ও মামলার আবেগঘন পোস্ট”

“বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন ও কারাভোগের তিক্ত অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন।”
পোস্টে তিনি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা, জেল-জুলুম এবং ব্যক্তিগত কষ্টের কথা যেমন তুলে ধরেছেন, তেমনি তার মেয়ের জন্য কারাগার থেকে কেনা একটি ব্যাগের আবেগঘন স্মৃতিও বর্ণনা করেছেন।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দিবাগত রাতে মির্জা ফখরুল নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেয়া পোস্টে তার মেয়ের সঙ্গে কারাগারে সাক্ষাতের একটি বিশেষ মুহূর্তের কথা উল্লেখ করেন। তিনি লেখেন:
আমার মেয়ে যখন আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল, ঢাকা জেলে, এই ব্যাগটা আমি ওকে দিয়েছিলাম! ব্যাগটা জেলের ভেতরে এক বন্দি বানিয়েছিল! তার কাছ থেকে কিনেছিলাম! জানি না, কাউকে কল্পনায় রেখে সে বানিয়েছিল কি না এই ব্যাগটা! প্রশ্ন করা হয়নি ছেলেটাকে!
মির্জা ফখরুল তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া বিপুল সংখ্যক মিথ্যা মামলার চিত্র তুলে ধরে বলেন, “গত পনেরো বছরে মিথ্যা মামলায় বাংলাদেশের জেলে লাখ লাখ কর্মী বন্দি ছিল! আমি নিজে, আমার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের করা, ১১০-এর বেশি মামলার আসামি ছিলাম।
ময়লার গাড়ি পোড়ানো থেকে শুরু করে হত্যা মামলা! সব মিথ্যা মামলা! আড়াই বছরের বেশি জেলে ছিলাম! কোর্টে কোর্টে আমার অসুস্থ স্ত্রী দৌড়ে গেছে! আসিফ নজরুল একবার পত্রিকায় লিখেছিলেন একটি কলাম ‘রাষ্ট্র বনাম মির্জা ফখরুল’! জেলে মাটিতেও শুতে হয়েছিল!”
তিনি আরও জানান যে, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিনিময়ে মুক্তির প্রলোভন দেখানো হয়েছিল, কিন্তু ‘প্রহসনের নির্বাচন’-এ তারা অংশ নেননি, যার ফলস্বরূপ তাকে ৭ বার জামিন প্রত্যাখ্যাত হতে হয়েছে।
মির্জা ফখরুল কারাগারে তার দলের সাধারণ কর্মীদের ওপর হওয়া অমানবিক নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে গভীরভাবে ব্যথিত হয়েছেন।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমি জেলে দেখেছি আমাদের ছেলেদের ওপর কী অত্যাচার হয়েছে! সারা শরীর জুড়ে অত্যাচারের দাগ! এদের অনেকের সারা জীবন, ভবিষ্যৎ শেষ হয়ে গেছে জেলে! পড়াশোনা হয়নি, সংসার হয়নি! এদের পরিবার সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে! যারা মাঠের রাজনীতি করে না, তারা কোনো দিন জানবে না এদের স্ট্রাগল! কথা নিয়ে অনেক রাজনীতি করা যায়, ফ্যাসিজমের সামনে দাঁড়িয়ে জেলে যেতে পারে না সবাই!’
দীর্ঘ কষ্টের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল জানান: তিনি কোনো ধরনের প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নন, বরং তিনি দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চান।
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের করা মিথ্যা মামলা এবং হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে! হাসিনার এবং তার মাফিয়া বাহিনীর প্রতিটি অপরাধের বিচার করতে হবে!
আমরা প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না; আমাদের অনাচার প্রতিশোধ নয়, বলের উপর বিচার এবং আইনের পূর্ণতায় বিশ্বাস। যে যে-ই অন্যায় করেনি, তাকে সেই অন্যায়ের জন্য হয়রানি কেন করা হবে? কোনো নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি করার নাম রাজনীতি নয়। আমরা ইনসাফের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে!’
ভিওডি বাংলা/জা







