মেডিসিন ও ফিজিওথেরাপির সমন্বয়ে সম্মিলিত চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োজন

দেশে প্রতিবছর স্ট্রোক, হার্ট এট্যাক, পক্ষাঘাতগ্রস্ততা কিংবা শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছে। তবে শুধু হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এইসব রোগীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারছে না। মেডিসিনের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে তাদের সুস্থ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সোসাইটি অব ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তসলিম উদ্দিন।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে ড. মুহাম্মদ তসলিম উদ্দিন বলেন, আমাদের গড় আয়ু বাড়ছে। ব্যাথা বেদনা কর্মক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। এতে শুধু ওষুধ দিয়ে কাজ হবে না। তিনটা রোগে ৭০ শতাংশ মানুষ মারা যায়। স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, ক্রনিক ডিজিজ। এসবের সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি নর্ধারণ করতে পারলে রোগীকে আবার স্বনির্ভর, কার্যকর জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, ইউএন বলছে, বাংলাদেশে প্রতি ৭ জনে এক জনের মধ্যে কোন না কোনভাবে প্রতিবন্ধকতা আছে। আমরা চাই, যে প্রতিষ্ঠানে এমন রোগীদের চিকিৎসা হবে সেই একই প্রতিষ্ঠানে তাকে ফিজিওথেরাপি দিয়ে একেবারে সুস্থ করে বাড়ি ফিরতে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে রিহ্যাবিলিটেশন নার্স তৈরি করা হবে এমন কোন কোর্সই নাই। শুধু ডাক্তার থাকলে হবে না, ফিজিওথেরাপিস্ট থাকতে হবে। রিহ্যাবিলিটেশন নার্স তৈরি করতে হবে। এর জন্য আইন, পলিসি, গভর্নেন্স দরকার। প্রতিটা মানুষেরই এখন কোন না কোন সমস্যা থাকে যা ফিজিওথেরাপির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন দিবসের প্রতিপাদ্য 'সমন্বিত পুনর্বাসনে চাই সম্মিলিত প্রচেষ্টা'। দিবসটি উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সকাল সাড়ে ৮ টায় র্যালি অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া সাড়ে ১০ টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে এম একে আজাদ বলেন, একটি দেশ তখনই প্রকৃত অর্থে উন্নত দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়, যখন সেখানে প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যা কম, প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধের সকল ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকে, এবং যেসব ব্যক্তি প্রতিবন্ধী তাদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও জীবনযাপনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পূর্ণ সহায়তা ও সুযোগ নিশ্চিত করা হয়।
এ ছাড়াও তিনি দেশের প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন ইউনিটকে শক্তিশালী করা; পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রিহ্যাবিলিটেশন জনবল নিয়োগ এবং জনসচেতনতা বাড়ানো; বিদ্যমান আইনকে কার্যকর, নতুন আইন প্রণয়ন ও নীতিমালা বাস্তবায়নে তৎপরতা বাড়ানো; সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, জেলা/উপজেলা প্রশাসন, এসএনজিও ও সিভিল সোসাইটি একসঙ্গে কাজ করা এবং স্কুল, কলেজ, কর্মক্ষেত্র, সড়ক-পরিবহন ইত্যাদি সর্বত্র প্রতিবন্ধি বান্ধব ইউনিভার্সাল ডিজাইনের মান মেনে তৈরির দাবি জানান।
ভিওডি বাংলা/ এমএম







