স্বাস্থ্যক্ষেত্রে একদম আমুল পরিবর্তন প্রয়োজন: তাসনিম জারা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা বলেছেন, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে একদম আমুল পরিবর্তন প্রয়োজন। শুধুমাত্র স্বাস্থ্যে যারা কাজ করছেন তাদের জন্য না, স্বাস্থ্য সেবা গ্রহীতা যারা আছেন তাদের জন্য। কারণ এই স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কোথাও কাজ করছে না।
বুধবার (১২ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কক মিলনায়তনে স্বাস্থ্য পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীদের যৌথ মঞ্চ 'ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্স' এর আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আপনারা আজকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে গেলে দেখবেন কিভাবে মেঝেতে মানুষ শুয়ে আছে। একটা জায়গায় যেখানে একজনের শোয়ারও জায়গায় নেই, সেখানে দুই তিনজন শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। আমরা তো সুস্থ অবস্থায় মেঝেতে শুই না। কিন্তু অসুস্থ অবস্থায় যেখানে আমার খুবই ক্রিটিক্যাল কন্ডিশন সেখানে রোগীদেরকে মেঝেতে থাকতে হচ্ছে।
তাসনিম জারা বলেন, এই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার এখন যে বর্তমান পরিস্থিতি, সেটার অনেকটাই প্রভাব আমাদের যারা রাজনীতিবিদ ছিলেন, যেভাবে স্বাস্থ্যবস্থা পরিচালিত হয়েছে, যে দুর্নীতি অর্থায়ন চলেছে সেটার রেজাল্ট। এই জায়গাটাতে আমাদের আর ফেরত যাওয়া যাবে না। আমাদের একদম সবকিছু আমুল পরিবর্তন আনতে হবে। স্বাস্থ্য অধিকারটা শুধুমাত্র যারা ক্ষমতায় আছেন ক্ষমতার কাছাকাছি আছেন তাদের জন্য সমর্থিত। একটা আইসিইউ বেড পেতে হলে কাউকে চেনা লাগবে। এমপিকে চেনা লাগবে বা ক্ষমতাসীন কাউকে চেনা লাগবে। হাসপাতালে ভর্তি হতে হলে সিট পেতে হলে কাউকে চেনা লাগবে। কিছু টাকা পয়সা দেয়া লাগবে। এরকম তো হওয়ার কথা ছিল না। আমাদের ইউনিভার্সাল হেলথ এক্সেসটা পাওয়ার কথা ছিল। সেই জায়গায় আমরা স্বাধীনতার এত বছর পরেও পৌছাতে পারিনি।
তিনি বলেন, আমরা জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং পরে জাতীয় নাগরিক পার্টি থেকে অনেক স্টেকহোল্ডারদের সাথে ইন্টারক্ট করেছি। অনেকগুলো সমস্যা আইডেন্টিফাই করেছি। আমাদের স্বাস্থ্য সংস্থা কমিশনে যারা ছিলেন তাদের সাথে কথা বলেছি। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা যে সবার জন্য যাতে স্বাস্থ্যটা নিশ্চিত করা যায়, স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা যায় সেই জায়গায় আমরা কাজ করব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এমারজেন্সি কেয়ার একদমই নেই। হার্ট অ্যাটাক হলে সঠিক জায়গা ও সময়ে চিকিৎসা না পেলে মানুষের প্রাণ যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দেশে এখনো কার্যকর জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। হাসপাতালে পৌঁছালেও চিকিৎসা শুরু হতে দেরি হয়। আমরা প্রস্তাব করেছিলাম, রোগীকে যখনই অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হবে, সেখান থেকেই চিকিৎসা শুরু করতে হবে। এটি একটি অত্যন্ত ভালো উদ্যোগ ছিল এবং প্রশংসনীয়ভাবে স্বাস্থ্য সংস্থা কমিশন আমাদের প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছে। তারা একটি পূর্ণাঙ্গ জরুরি চিকিৎসা রেফারেন্স সিস্টেম সাজানোর প্রস্তাবও দিয়েছে। তবে দুঃখের বিষয়— এই প্রস্তাব বাস্তবায়নের কোনো রূপরেখা এখনো নির্ধারিত হয়নি। কবে, কীভাবে এটি কার্যকর হবে, তা কেউ জানে না। অথচ এই জরুরি সিস্টেম বাস্তবায়ন করা এখন সময়ের দাবি।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ



