গণভোট ছাড়া নির্বাচন নয়:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল

নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জামায়াতে ইসলামী একটি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে শহরের টি.এ. রোডের আশিক প্লাজা চত্বর থেকে এ মিছিল শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিলে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর ইউনিটের শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
মিছিল শেষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা বলেন, গণভোট ছাড়া নির্বাচন নয় এ দাবি এখন দেশের মানুষের মনের দাবি। তারা অভিযোগ করেন, জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া তড়িঘড়ি করে নির্বাচন আয়োজন করলে তা কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না। ডিসেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করে জনগণের মত যাচাই করার পর নির্বাচন দিতে হবে বলে বক্তারা দাবি জানান।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন-মাওলানা মোবারক হোসাইন আকন্দ। তিনি বলেন, দেশের রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে গণভোটই হতে পারে সর্বোত্তম পথ। “বর্তমান পরিস্থিতিতে জনগণের মতামত যাচাই করা ছাড়া নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, সরকার যদি জনগণের স্বাধীন মতামত প্রকাশের অধিকারকে সম্মান করে, তবে গণভোটের মাধ্যমে তারা কী ধরনের সরকার চান, তা স্পষ্টভাবে জানাতে পারবেন। “এই দাবি জনগণের দাবি-আমরা শুধু প্রকাশ করছি।
বিশেষ অতিথি অধ্যাপক জোনায়েদ হাসান বলেন, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে জনগণের ম্যান্ডেট নিশ্চিত হওয়া জরুরি। তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক করতে হলে প্রথমে আস্থা তৈরি করতে হবে। “গণভোট সেই আস্থা তৈরির প্রথম ধাপ দাবি করেন তিনি।
বিশেষ অতিথি আবুল বাশার ভূইয়া বলেন, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য, দেশের বিভিন্ন স্থানে গণভোটের দাবিতে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় নেমে আসছে। তিনি দাবি করেন, গণভোটের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের সুযোগ নয়, বরং দেশের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নির্ধারণের সুযোগ তৈরি হবে।
তিনি বলেন, “আমরা সংঘাত চাই না, সহিংসতা চাই না। গণভোট ও নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পরিবর্তন চাই।”
এছাড়া বক্তব্য রাখেন জনাব রুকন উদ্দিন, সভাপতি-শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা। তিনি বলেন, শ্রমজীবী মানুষের অধিকারের জন্য স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ প্রয়োজন। ন্যায্য বেতন, নিরাপদ কর্মপরিবেশসহ শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য জনগণের মতামতকে সর্বাগ্রে গুরুত্ব দিতে হবে। “গণভোট জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার পথ খুলে দেবে, সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন হাফেজ কাউছার আহমেদ, সেক্রেটারি-বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা। তিনি বলেন, সরকার যদি সত্যিকারের সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ চায়, তবে জনগণের মতামত প্রথমেই গ্রহণ করা প্রয়োজন। তিনি অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত হওয়ায় জনগণের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জনগণের কাছে তাদের দাবি পৌঁছে দিতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। “কোনো ধরনের উসকানি বা সংঘাতে আমরা যেতে চাই না। গণতান্ত্রিক আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবেই চালিয়ে যাব, মিছিল ও সমাবেশে বক্তারা একযোগে ডিসেম্বরের মধ্যেই গণভোটের তারিখ ঘোষণা এবং নিরপেক্ষ তদারকির মাধ্যমে তা বাস্তবায়নের দাবি জানান। তারা বলেন, গণভোট ও নির্বাচন-উভয় প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই হবে দেশের সবার জন্য কল্যাণকর।
এসময় নেতারা আরও অভিযোগ করেন, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর সরকারি চাপ ও সীমাবদ্ধতা আরোপ করে গণতন্ত্রকে সংকুচিত করা হচ্ছে। তারা বলেন, জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকলে রাজনৈতিক অস্থিরতা কমে যাবে এবং দেশের উন্নয়ন আরও গতিশীল হবে।
স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় গণভোট ও গণতন্ত্র নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অবস্থান উত্তপ্ত হচ্ছে। জামায়াতে ইসলামীর এই কর্মসূচি সেই বিতর্ককে আরও সামনে এনে দিয়েছে।
ভিওডি বাংলা/আমিনুল ইসলাম আহাদ-জা





