বিহারের সবচেয়ে কম বয়সী বিধায়ক মৈথিলি ঠাকুর

ভারতের বিহার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মাত্র ২৫ বছরে পা রাখা মৈথিলি ঠাকুর। এই বয়সেই বিহার বিধানসভার নির্বাচিত নেতা হিসেবে নাম লিখিয়েছেন।
বিজেপির এই তরুণ প্রার্থী দারভাঙ্গার আলীনগর আসনে আরজেডির ভারী প্রার্থী বিনোদ মিশ্রকে ১১ হাজার ৭৩০ ভোটে পরাজিত করে জয় ছিনিয়ে আনেন। মোট ৮৪ হাজার ৯১৫ ভোট পেয়ে তার এই জয় আসে এমন এক নির্বাচনে, যেখানে বিজেপি সমর্থিত এনডিএ জোট ২৪৩ আসনের মধ্যে ২০০–র বেশি আসন পেয়ে ক্ষমতায় ফিরে এসেছে। কংগ্রেস সমর্থিত মহাজোট পেয়েছে মাত্র ৩৫টি আসন।
নির্বাচনী ফল ঘোষণার পর এনডিটিভিকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় মৈথিলি জানান, তিনি ‘একজন বিহারি হিসেবে গর্বিত’। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে কাজ করতে পেরে ‘খুশি’। তার ভাষায়, ‘মোদির দিকনির্দেশনা প্রতিটি বিহারিকে গর্বিত করবে।’
রাজনীতিতে তরুণদের অনীহা প্রসঙ্গে মৈথিলি বলেন, ‘সংবেদনশীল ও মেধাবী মানুষদের রাজনীতিতে আসাটা জরুরি।’
তিনি জানান, তার ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা রাজনীতিতে না আসতে সতর্ক করলেও তিনি বিশ্বাস করেন- ‘পরিবর্তন সম্ভব, সেটার উদাহরণ তৈরি করতে চাই।’
সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল নির্বাচনী প্রচারণার সময় তার বিরুদ্ধে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন নেতিবাচক মন্তব্য।
মৈথিলি বলেন, ‘শুরুর দিকে অনেক কেঁদেছি। মানুষ নানা মন্তব্য করত, আমার সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ করত। এখন কঠোর পরিশ্রম করে তাদের ভুল প্রমাণ করব।’
তিনি আরও জানান, রাজনীতির পাশাপাশি সংগীতও চালিয়ে যাবেন। সংগীত তার জীবনের বড় অংশ হয়েই থাকবে।
কে এই মৈথিলি ঠাকুর ২০০০ সালের ২৫ জুলাই জন্ম নেওয়া মৈথিলি ঠাকুর দেশের জনপ্রিয় তরুণ লোকসংগীত শিল্পীদের একজন। শাস্ত্রীয় ও লোকসংগীতে ছোটবেলা থেকেই প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। তিনি দিল্লির দ্বারকার বাল ভবন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পড়াশোনা করেন। পরে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতী কলেজ থেকে ২০২২ সালে বিএ প্রোগ্রাম সম্পন্ন করেন।
২০১৭ সালে রিয়েলিটি শো ‘রাইজিং স্টার ইন্ডিয়া’তে ফাইনালিস্ট হয়ে দেশজুড়ে পরিচিতি পান। এরপর থেকে মৈথিলি, ভোজপুরি ও হিন্দিসহ বিভিন্ন ভাষায় লোকসংগীত ও ভজন গেয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। গত বছর জাতীয় ক্রিয়েটর অ্যাওয়ার্ডে তিনি ‘কালচারাল অ্যাম্বাসেডর অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হন।
সচ্ছল তরুণ নেত্রী ২০২৫ সালের নির্বাচনী হলফনামায় মৈথিলি নিজের সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছেন প্রায় ৩ কোটি ৮২ লাখ রুপি। সবই তার নিজস্ব অর্জিত সম্পদ। চলতি সম্পদের পরিমাণ ২ কোটি ৩২ লাখ রুপি, যার বড় অংশ তার মালিকানাধীন ফার্ম M/s Maithili Thakur-এ বিনিয়োগ করা। তার প্রায় ৫২ লাখ রুপির সোনার গয়না, ব্যাংক আমানত ও মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে।
অন্যান্য সম্পদের মধ্যে দিল্লির দ্বারকায় একটি ফ্ল্যাটের ৫০ শতাংশ মালিকানা রয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় দেড় কোটি রুপি। হলফনামা অনুযায়ী, তার নামে কোনো ঋণ নেই এবং কোনো ফৌজদারি মামলা নেই।
ভিওডি বাংলা/ এমএম







