দেশপ্রেমিকরা কখনো দেশ ছেড়ে পালায় না: মিলন

রাজশাহীর দুর্গম চরাঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার দুরবস্থার কারণে দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন।
তিনি বলেন, “সাবেক মন্ত্রী কবীর হোসেন এবং সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু এই চরাঞ্চলে বহু উন্নয়ন করেছিলেন। সেই ধারাবাহিকতা আবারও শুরু করা হবে। দ্রুততম সময়ে চর এলাকার সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে একটি পরিকল্পনা করা হবে। প্রথমেই যোগাযোগব্যবস্থা উন্নয়ন করা জরুরি। যোগাযোগ ভালো হলে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সব ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসবে।”
শুক্রবার বিকেলে চর নবীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে হরিপুর ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ড বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটকেন্দ্রভিত্তিক নির্বাচনী প্রস্তুতি ও রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের পক্ষে গণসচেতনতা সৃষ্টিমূলক কর্মীসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মিলন বলেন, নদীপথে সরকারি উদ্যোগে যাতায়াতব্যবস্থা সহজ করা যায় কি না- সে দিকেও পদক্ষেপ নেওয়া হবে। চরাঞ্চলের কৃষিপণ্য যাতে ন্যায্য দামে বিক্রি করা যায়, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দেন তিনি।
তিনি বলেন, “রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফার মধ্যে দেশের মানুষের উন্নয়ন, দৈনন্দিন জীবন, পররাষ্ট্রনীতি থেকে শুরু করে স্বৈরাচার-ফ্যাসিবাদ রোধে সব দিক নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের প্রসঙ্গ টেনে মিলন বলেন, “যারা প্রকৃত দেশপ্রেমিক, তারা দেশ ছেড়ে পালায় না। কিন্তু শেখ হাসিনা একবার নয়, তিনবার দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। অথচ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ওয়ান-ইলেভেনের ভয়াবহ চাপের মধ্যেও দেশ ত্যাগ করেননি।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোকে হত্যার উদ্দেশ্যে রিমান্ডে নির্যাতন করা হয়েছিল। তারপরও বেগম খালেদা জিয়া মাথানত করেননি। তিনি বলেছেন- আমার সন্তান শুধু দুইজন নয়, পুরো দেশের মানুষ।”
মিলন বলেন, “ফ্যাসিস্ট সরকারের হাতে বেগম জিয়াকে মিথ্যা মামলায় দীর্ঘ সোয়া ছয় বছর কারাবন্দি রাখা হয়েছিল। ছয়বার মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন তিনি। এখন তিনি শারীরিকভাবে কথা বলতেও কষ্ট পান।”
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। কিন্তু জামায়াতে ইসলাম নির্বাচন বানচাল করতে মরিয়া। তারা কখনো পিয়ার পদ্ধতি, কখনো সংস্কার—এই ধরনের দাবি তুলে অসহযোগিতা করছে। এখন আবার বলছে গণভোট ছাড়া নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।”
উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, “জামায়াত ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে ভারতের পক্ষে ছিল। ১৯৭১ সালে তারা পাকিস্তানের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছে। ১৯৮৬ সালে এরশাদের নির্বাচনে অংশ নিয়ে জাতীয় মোনাফেক হয়েছে। পরে বিএনপির সঙ্গেও ছিল, আবার আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টির সঙ্গে মিলে বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। এটি তাদের রাজনৈতিক চরিত্র।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- পবা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, নওহাটা পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র আলহাজ্ব শেখ মকবুল হোসেন, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি মুক্তার হোসেন মুক্তার, মতিহার থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আনসার আলী, রাজপাড়া থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি শওকত আলী, জেলা বিএনপির সদস্য ও তানোর পৌর মেয়র মিজানুর রহমান মিজান, মোহনপুর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাজিম উদ্দিন, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদুল ইসলাম সাহেব, পবা উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল রানা, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কে এইচ রানা শেখ, বিএনপি নেতা মতিউর রহমান মতি, সিরাজুল ইসলাম কালু, মহানগর ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম রেজা, হরিপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক হাসিবুল হোসেনসহ বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ







