ভারতের কোনো দালালকে ভোট দেবেন না: মাহমুদুর রহমান
'আমার দেশ' সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান ভোটারদের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আগামী নির্বাচনে ভারতের কোনো দালালকে ভোট দেবেন না। তিনি তরুণদের প্রতি আহ্বান জানান, প্রমাণ করতে হবে ভারতের সাথে দালালি করে কেউ এদেশে আর ক্ষমতায় যেতে বা টিকে থাকতে পারবে না।'
শনিবার (১৫ নভেম্বর) যশোরে 'বহুমাত্রিক জ্ঞানচর্চা কেন্দ্র প্রাচ্যসংঘ' আয়োজিত ‘জুলাই বিপ্লবোত্তর পরিস্থিতি ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, 'যদি ভারতীয় দালালমুক্ত জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারি, তাহলে প্রয়োজনে সেই প্রতিনিধি ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আপনার এলাকায় রাজপথে নেতৃত্ব দেবেন।
ড. মাহমুদুর রহমান আসন্ন নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেই 'দিল্লির সকল ষড়যন্ত্র আর দাদাগিরি বন্ধ হয়ে যাবে'। তবে, ভারত কোনোভাবেই চাইবে না বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হোক।
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি তিনি আরও বলেন, চব্বিশের জুলাই বিপ্লব তরুণরা শুধু ফ্যাসিবাদ মুক্তই করেনি, একটি নতুন গণতান্ত্রিক বন্দোবস্ত কায়েমের সুযোগ সৃষ্টি করেছে, যা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমেই সম্ভব। 'তরুণদের স্বপ্ন ও আবেগের সাথে বেঈমানি করা যাবে না। তাহলে এই জাতি কাউকে ক্ষমা করবে না।
বক্তব্যের শুরুতেই তিনি জুলাই আন্দোলনের শহীদ আনাসের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেন এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে 'আনাসদের মত শিশুদের জীবনদান ভুলে না যাওয়ার' অনুরোধ করেন।
শেখ হাসিনার দেশে ফেরার আলোচনা প্রসঙ্গে মাহমুদুর রহমান বলেন, 'আপা আর ফিরবেন না। এই চ্যাপ্টার ক্লোজড।' তিনি বলেন, ২০১৮ সালে তিনি বিপ্লবের মাধ্যমে ফ্যাসিস্টের পতনের কথা বললেও তাকে উগ্রবাদী বলা হয়েছিল। কিন্তু, আনাসসহ তরুণরাই প্রমাণ করেছেন, 'তারাই বিপ্লবী।' তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বিপ্লবী সরকার হয়েও প্রতিটি স্তর থেকে ফ্যাসিবাদের উচ্ছেদ করতে পারেনি।
ড. রহমান বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা এলেও প্রকৃত স্বাধীনতা আসেনি; শেখ মুজিবের মাধ্যমে এদেশে আধিপত্য বিস্তার করেছিল ভারত। মেজর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর পূর্ণ স্বাধীনতা আসে। যা ২০০৯ সালে হরণ করা হয়েছিল এবং ২০২৪ এর জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে ছাত্র-জনতা তা পুনরুদ্ধার করেছেন।
তিনি তরুণ প্রজন্মকে বাংলার প্রকৃত ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য চর্চা করার আহ্বান জানান। তার মতে, আমরা যদি আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধারণ করতে পারি, তাহলে 'কোলকাতার ব্রাহ্মণ্যবাদ আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। সাংস্কৃতিক বিজয় হলে রাজনৈতিক বিজয় হবে, আর রাজনৈতিক বিজয় হলে দিল্লির আধিপত্য ধ্বংস হবে।'
সভায় আরও বক্তব্য দেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল মজিদ, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্য সৈয়দ আবদাল আহমেদ এবং লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট বেনজীন খান। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রাচ্যসংঘের সুপ্রিম কাউন্সিলের সদস্য আখতার ইকবাল টিয়া।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ
