• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

শ্বশুরবাড়ির নির্যাতনে প্রাণ হারালেন আশা মনি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি    ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:০৯ পি.এম.
ছবি: ভিওডি বাংলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের ক্ষুদ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া গ্রামের শওকত আলীর মেয়ে আশা মনি (২৫) স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

গত ৪ নভেম্বর আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়নের মইশার গ্রামে স্বামী মমিন মিয়ার বাড়িতে আশা মনির মৃত্যু হয়। পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে পারিবারিকভাবে চার লাখ টাকা কাবিনে সৌদি প্রবাসী মমিন মিয়ার সঙ্গে আশা মনির বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ক্রমাগত বিরোধ ও কলহ শুরু হয়। এক বছর পর আশা মনি একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। এর পর থেকেই মমিন মিয়ার পরকীয়া সম্পর্কের অভিযোগ উঠে।

আশা মনির পরিবারের দাবি, মমিন মিয়া দীর্ঘদিন ধরে তার ভাবি লাকি আক্তারের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত ছিলেন এবং বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা সরাসরি ভাবির কাছে পাঠাতেন। আশা মনি বিষয়টি জানার পর থেকেই শুরু হয় নির্যাতন। শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের সহায়তায় তাকে বিভিন্ন সময়ে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়।

আশা মনির  আম্মা জাকিয়া বেগম বলেন, "আমি হতদরিদ্র মানুষ। আমার মেয়েকে বিয়ে করে নিয়ে তারা মেরে ফেলেছে। স্থানীয় গ্রাম্য সালিশে সমাধানের চেষ্টা করলেও মমিনের পরিবার তা প্রত্যাখ্যান করে আমাদের উল্টো হুমকি দেয়।"

আশা মনির বোন তৃষা মনি বলেন আমার বোন যদি মারা যাবে ওই দিন সকালে আমার বোন আমাকে কল দিয়েছে এবং বলেছে আমার স্বামী ও আমার যা লাকি আক্ত এবং আমার শ্বশুর বাড়ির সবাই আমাকে বলে এত মানুষ বিষ খেয়ে মরে তুই কেন মরস না আশা মনির বোন তিশা মনি আরো বলেন আমার বোনকে তারা সবাই মিলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে আমি আমার বোনের হত্যার বিচার চাই তিশা মনি আরো বলেন এলাকার মানুষের মাধ্যমে সালিশি হলেও তারা ঐ সালিশির কোন প্রকার রায় মেনে না নিয়ে আমাদেরকে হুমকি দিচ্ছে আমরা যেন কোন প্রকার থানা কোটে যেন মামলা না করে আমরা অসহায় তাই আমরা পরিপূর্ণ বিচার পাওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

ক্ষুদ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সালিশ কারক মো. সোলমান মিয়া জানান, “সালিশে একটি অর্থদণ্ডের রায় হয়েছিল, কিন্তু মমিন মিয়ার পরিবার তা মানেনি। তারা আমাদেরকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে যেন কথা না বলি। এমনকি ঢাকার এক ব্যক্তি ফোন দিয়ে মোবাইলে মাধ্যমে হয়রানির হুমকিও দেন।”

আশা মনির পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে স্বামী মমিন মিয়া, ভাবি লাকি আক্তার, বড় ভাই শাজাহান মিয়া, দেবর জালাল ও রিয়াদ মিয়া এবং ননদ সাবিনা আক্তারের বিরুদ্ধে।

বিষয়ে মোমিন মিয়া ও তার ভাবি লাকি আক্তার প্রতিবেদককে বলেন, "সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এসব অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। আপনারা তদন্ত করে সত্যতা যাচাই করার পর পত্রিকায় যেকোনো কিছু প্রকাশ করুন—আমাদের কোনো আপত্তি নেই।"

মোমিন আরও বলেন, "আমি আমার প্রবাস জীবনে যত উপার্জন করেছি, সবই আমার শ্বশুর-শাশুড়ি ও স্ত্রীর নামে পাঠিয়েছি। আমার স্ত্রী কিংবা আমার পরিবারের সঙ্গে কোনো ধরনের ঝগড়াঝাঁটি হয়নি। আমার স্ত্রী সব সময় আমাদের বাড়িতেই থাকতেন এবং আমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় ছিল।"

তিনি আরও দাবি করেন, "আমার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন শ্বশুরবাড়িতে টাকাপয়সা লেনদেন নিয়ে তার নিজের মা অর্থাৎ আমার শাশুড়ির সঙ্গে বিরোধের কারণে। আমার শাশুড়ির বিকাশ নম্বরে আমি যে টাকা পাঠিয়েছি তার সমস্ত স্টেটমেন্ট আমার কাছে আছে। আপনারা চাইলে সেই ডকুমেন্টও দিতে পারব।"

এ বিষয়ে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন চার তারিখের বিষয় আমি খাতা না দেখে বলতে পারবো না 

এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে সাধারণ ডাইরি  নাম্বার ২২৫  মামলার জানা যায়
এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি। তবে আশা মনির পরিবার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। 

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে নবাবগঞ্জে পুলিশের টহল জোরদার
শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে নবাবগঞ্জে পুলিশের টহল জোরদার
কুড়িগ্রাম- ৪ আসনে লিপিকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন
কুড়িগ্রাম- ৪ আসনে লিপিকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন
ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে ‘আমা দাবলাম’ জয় করলেন পাবনার তৌকির
ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে ‘আমা দাবলাম’ জয় করলেন পাবনার তৌকির