সাইফুজ্জামান-জাবেদসহ স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের ৬০ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, তার ভাই ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক পরিচালক আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি এবং রনির স্ত্রী মেঘনা ব্যাংকের সাবেক পরিচালক ইমরানা জামান চৌধুরীর নামে থাকা মেঘনা ব্যাংকের প্রায় ৪ কোটি ৬৪ লাখ শেয়ার অবরুদ্ধ করেছে। এসব শেয়ারের বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৬০ কোটি টাকা।
অনুসন্ধানে অবৈধ অর্থ দিয়ে এসব শেয়ার ক্রয়ের প্রমাণ পাওয়ায় আদালতের নির্দেশে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, তার ভাই ইউসিবি ব্যাংক পিএলসি-এর সাবেক পরিচালক আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি এবং রনির স্ত্রী মেঘনা ব্যাংক পিএলসি-এর সাবেক পরিচালক ইমরানা জামান চৌধুরীর নামে থাকা মেঘনা ব্যাংকের প্রায় সাড়ে চার কোটি শেয়ার অবরুদ্ধ করেছে সিআইডি।
অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, অভিযুক্তদের নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন ব্যক্তিগত হিসাব এবং তাদের কাগুজে প্রতিষ্ঠান স্টিডফাস্ট ম্যানেজমেন্ট ট্রেডিং লি.-এর নামে মোট ৪ কোটি ৫৩ লাখ ৩০ হাজার ২০০ শেয়ার ক্রয় করা হয়, যার তৎকালীন বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৫৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এসব শেয়ার পরে স্টক ডিভিডেন্ড যোগ হয়ে মোট শেয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৪ কোটি ৬৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৫৫টিতে উন্নীত হয়।
অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, জালিয়াতি এবং সংঘবদ্ধ অপরাধের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ অর্জন করেছেন। এই অর্থের একটি অংশ বিভিন্ন মাধ্যমে বিদেশে প্রেরণ করা হয় এবং পুনরায় দেশে এনে বৈধ করার চেষ্টা করা হয় মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান আরও জানান, ২০২২ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, সিঙ্গাপুর ও দুবাই থেকে মোট ২ কোটি ২২ লাখ ৫ হাজার ৪৪৪ মার্কিন ডলার দেশে আনা হয়। এই টাকা অভিযুক্তদের সহযোগী আবুল কাসেমের মাধ্যমে ইউসিবি ব্যাংক ও এনআরবিআইসি ব্যাংকের এফসি অ্যাকাউন্টে জমা হয়। পরে ইমরানা জামান চৌধুরী এবং স্টিডফাস্ট ম্যানেজমেন্ট ট্রেডিং লি.-এর নামে মোট ৬০ কোটি টাকা নগদ ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা করা হয়। ওই অর্থ কমিউনিটি ব্যাংকের একটি বিশেষ অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে ৫৯.৯৫ কোটি টাকা মেঘনা ব্যাংকের শেয়ার ক্রয়ে ব্যবহার করা হয়।
স্টিডফাস্ট ম্যানেজমেন্ট ট্রেডিং লি. নামীয় প্রতিষ্ঠানটিতে উৎপল পালকে ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং নাসিম উদ্দিন মোহাম্মদ আদিলকে ডিরেক্টর হিসেবে দেখানো হয়েছে। উভয়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এর মালিকানাধীন আরামিট গ্রুপেরও কর্মচারী এবং ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে সিআইডির অনুসন্ধানে প্রকাশিত হয়।
ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত গতকাল মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এসব সম্পদ জব্দের আদেশ প্রদান করেন। ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের নেতৃত্বে সিআইডির অনুসন্ধান এখনও অব্যাহত রয়েছে।
ভিওডি বাংলা/জা







