বাঁশখালীতে বনের জায়গায় গড়ে তুলা স্থাপনা গুড়িয়ে দিল বন কর্মকর্তা

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে সরকারি পাহাড় কেটে গড়ে তুলা অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়েছে বন বিভাগ।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ৯ ঘটিকায় উপজেলার কালীপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড এলাকায় এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। অপরদিকে সংশ্লিষ্ট বন কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে সরকারি বনের জায়গায় বসতঘর নির্মাণ মর্মে উল্লেখ করে ইসলামা খাতুন বাদী গত (২১ -১০-২০২৪ অক্টোবর) বাঁশখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রার আদালতে চাঁদা না দেওয়ায় বসতঘর ভাঙচুর করেছে মর্মে উল্লেখ করে বন কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে পূর্ব শত্রুতা হাসিল করতে এক প্রবাসীসহ এলাকার নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মামলায় ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা হলেন, একই এলাকার প্রবাসী শাহাব উদ্দীন, লোকমান, আবদুল আজিজ, মোঃ আমিন, জসিম উদ্দিন, এনামুল হক, নুরুল আমিন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বন বিভাগের জায়গায় গড়ে তুলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানটি একটি ভালো উদ্যোগ। ভাঙচুরের অভিযোগে দায়ের করা এই মামলার বিষয়ে এলাকাবাসীর দাবি, মামলার এজাহারে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়। সরকারি পাহাড় কেটে ঘর নির্মাণ করলে সেই ঘর বনবিভাগ ভেঙে দিলে পরে পূর্ব শত্রুতার উদ্দেশ্য হাসিল করতে নিজের অপরাধ ঢাকতে এই সাজানো মামলা করা হয়েছে বলে তারা পাল্টা অভিযোগ করেছেন। এ ছাড়া এলাকার লোকজন ঘটনাটির নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়েছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকারি পি.এফ জায়গা সংশ্লিষ্ট বনবিভাগের অনুমতি নিয়ে বসতঘর নির্মাণ করেন। পরে আসামিগণ চাঁদা দাবি করলে তা দিতে অস্বীকার করাই। গত ১০ অক্টোবর সকাল আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে ১নং আসামিসহ সবাই বসতঘরে প্রবেশ করে ইসলামা খাতুনকে মারধর করে নির্মাণ কৃত ঘর ভাংচুর করেন।
এদিকে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে মামলার এজাহারে উল্লেখিত ঘটনার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল খুঁজে পায়নি প্রতিবেদক। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায় কালীপুর ইউনিয়নের ৯ ওয়ার্ড এলাকার সরকারি পাহাড় কেটে বসতঘর নির্মাণ করলে তা পরে জানাজানি হলে রেঞ্জ কর্মকর্তা মনোয়ারের নির্দেশ ক্রমে কালীপুরের সাবেক বন বিট কর্মকর্তা আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে নির্মাণ কৃত ঘরটি ভেঙে উচ্ছেদ করেছে।
মামলার শাহাব উদ্দিন ১নং আসামি উল্লেখ করা হলেও স্থানীয়রা জানিয়েছেন ভিন্ন তথ্য! ঘটনার সময় শাহাব উদ্দিন ছিলেন বাহারচড়া ভাড়া বাসায়। শাহাব উদ্দিন বলেন, আমার পরিবারের সাথে পূর্বের শত্রুতার উদ্দেশ্য হাসিল করতে এমন বানোয়াট মিথ্যা মামলা করেছে এবং আমি একজন প্রবাসী। প্রবাসে এসে জানতে পেরেছি ইসলামা খাতুন নামের একজনের ঘর ভাংচুরের অপরাধ এনে আমাকে এক নম্বর আসামি করে আমরা ৭ জনের বিরুদ্ধে বাঁশখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমি অবাক হয়েছি কারণ সরকারি জায়গা অবৈধভাবে দখল করে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে পাহাড় কেটে ঘর নির্মাণ করে মামলার বাদি ইসলামা খাতুন। পরে সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে তুলা ঘরটি বনবিভাগের লোকজন উচ্ছেদ করেছে। সে উচ্ছেদ করার সময় আমি ও আমার স্ত্রী সন্তান নিয়ে বাহারচড়া মঙ্গল ঘাঁটায় বসবাস করি। এদিকে মামলায় উল্লেখ করা হলো আমি সহ সকল আসামি ঘরে প্রবেশ করে মালার বাদিকে মারধর করে ঘর ভাংচুর করেছি।আমি এই মিথ্যা বানোয়াট তথ্যের মাধ্যমে করা মামলাটির সঠিক তদন্তের জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে হয়রানিতে সম্মান হানির করাই মানহানি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি বলে জানান।
কালীপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ লোকমান বলেন, বনের জায়গায় নির্মিত ঘরটি কালীপুর বন বিভাগের কর্মকর্তার নির্দেশে উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে জানান।
কালীপুর বন বিট কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, কালীপুর বনের আওতাধীন জায়গায় অবৈধভাবে পাহাড় কেটে স্থানীয় ইউনুছ নামের এক স্থানীয় অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ করেন। পরে অবৈধভাবে বনের জায়গায় গড়ে তুলা ঘরটি আমরা বনবিভাগের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ করে সরকারি জায়গায় জবরদখল কারীদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছি। পরে জবরদখল কারীরা উল্টো স্থানীয়রা ভাংচুর করেছে মর্মে একটি মামলা দায়ের করেছে যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা। আমি ওই অবৈধ ঘরটি উচ্ছেদ করার পর পর কালীপুর বন বিট থেকে বদলি হয়ে বর্তমানে পদুয়া আছি।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ







